আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
0

পায়রা বন্দর ঘিরে অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে চায় সৌদি

পটুয়াখালী

সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর পায়রা। আমদানি-রপ্তানিতে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে এই বন্দরের। এমন সময় সৌদি সরকার এই বন্দরকে ঘিরে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশের সামগ্রিক বাণিজ্যের বেশিরভাগই হয় সমুদ্রবন্দর ও নদীপথে। দেশের আমদানি-রপ্তানির চাহিদা মেটাতে ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর পায়রা বন্দর নির্মাণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট পণ্য আমদানির মাধ্যমে শুরু হয় বন্দরের কার্যক্রম।

এরপর দেশের সবচেয়ে বড় পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা ও দেশের বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের যন্ত্রাংশ, ক্লিংকার, খাদ্যশস্যসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি শুরু হয়। বড় জাহাজের জন্য বন্দরের ৭০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ২০০ মিটার প্রস্থের রাবনাবাদ চ্যানেল খননের উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। ২০২২ সালের আগস্টে বেলজিয়ামভিত্তিক জানদিনুল কোম্পানির মাধ্যমে চ্যানেলটি ১০.০৫ মিটার গভীরতায় খনন করা হয়। পরে ২০২৩ সালের ২৬ মার্চ যা হস্তান্তর করা হয় বন্দর কর্তৃপক্ষের আছে। এরপর থেকে সাড়ে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ পণ্য নিয়ে বন্দরে ভিড়তে শুরু করে।

তথ্য বলছে, ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ৮ বছরে এই বন্দর থেকে সরকার আয় করেছে ১ হাজার ১৩৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বেশি। পায়রা বন্দর পণ্য আমদানির মাধ্যমে যখন গতিশীল তখন সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়তে আগ্রহী সৌদি সরকার।

সৌদি সরকারের বিনিয়োগ নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন সালমান এফ রহমান

সম্প্রতি সৌদি আরব সফর শেষে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এ কথা জানান। বলেন, 'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উনাদেরকে বলেছিলেন একটা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল দিতে চান সৌদি আরবের জন্য।'

এমন খবরে উচ্ছ্বসিত স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বলছেন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে পায়রা বন্দর দেশের অর্থনৈতিক করিডোরে বাস্তবায়ন হওয়ার পথে এগিয়ে যাবে।

কলাপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, 'সৌদি আরব পায়রা বন্দরে বিনিয়োগ আগ্রহ প্রকাশ করায় এই অঞ্চলের গুরুত্ব বেড়েছে। বন্দর গতিশীল হলে ব্যবসায়ীরা বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে।'

পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রায় সাড়ে ছয় হাজার একর জমির বিভিন্ন অংশে শিল্পাঞ্চল নির্মাণে জমি বরাদ্দ করেছে কর্তৃপক্ষ। বিদেশি বিনিয়োগ হলে এ অঞ্চলটি অর্থনৈতিক হাবে পরিণত হবে মনে করেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী। বলেন, 'এই কাজটা হতে দুই থেকে তিন বছর পর্যন্ত সময় লাগবে। এরমধ্যে সড়ক এবং সেতুগুলো যখন হয়ে যাবে। তখন এই অঞ্চলের অবস্থা অনেক উপরের দিকে চলে যাবে।'

গেল ৮ বছরে এই বন্দরে ভিড়েছে ২ হাজার ৩৩২টি জাহাজ।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর