বস্ত্রশিল্পে সুতা উৎপাদন ও সুতা থেকে কাপড় তৈরির প্রতিটি ধাপে গ্যাসের সুনির্দিষ্ট চাপ অপরিহার্য। যেখানে ১০ থেকে ৮ পিএসআই বা ৮ বার গ্যাসের চাপ প্রয়োজন হয় সেখানে কারখানাগুলো পাচ্ছে মাত্র ২ থেকে ৪ পিএসআই। যা না পাওয়ায় টেক্সটাইল কারখানাগুলো সংকটে পড়েছে।
গ্যাস ছাড়া চলে না ব্রয়লার, আর উৎপাদনের কোন ধাপে গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ হলে নষ্ট হয় যন্ত্র ও বিপুল কাঁচামাল। টানা চার মাস ধরে চট্টগ্রামে গ্যাসের স্বল্পচাপজনিত ঘাটতিতে অনেক বস্ত্র কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
কারখানার শ্রমিকরা বলেন, ‘গ্যাস সংকটের কারণে কারখানায় কাজ করতে পারছি না। এজন্য অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে আমরাও বেকার হয়ে পড়ছি।’
ক্লিফটন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন চোধুরী বলেন, ‘ গ্যাসের চাপ কম থাকায় আমরা সময়মতো উৎপাদন করতে পারছি না। এতে করে গ্রাহকের চাহিদামতো পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।’
আবাসিক, শিল্প ও বাণিজ্য মিলিয়ে চট্টগ্রামে গ্যাসের চাহিদা দৈনিক ৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। বিপরীতে চট্টগ্রামকে ২৮০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দেয়া হচ্ছে। দিনের বেলায় গ্যাসের চাপে না থাকায় রাতে শ্রমিকদের দ্বিগুণ ওভারটাইম দিয়ে কাজ করাতে হচ্ছে। এতে ক্রেতাদের সঠিক সময়ে পণ্য সরবরাহ করা যাচ্ছে না।
এ অবস্থায় কাঁচামাল সংকটে পড়ছে তৈরি পোশাক কারখানা। এতে যথাসময়ে কঠিন হয়ে পড়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানি।
বিজিএমইএ‘র সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, আমাদের খাতটা কিন্তু অনেকাংশে গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। তাই গ্যাসের সংকট হলে আমরা উৎপাদন করতে পারবো না। আর উৎপাদন না হলে আমরা রপ্তানি করতে পারবো না।’
এদিকে প্লাস্টিক, ইস্পাত, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতসহ ভারী শিল্পেও উৎপাদন কমেছে। মিল-কারখানা মালিকদের অভিযোগ, শুধু এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহের কারণে সংকট যেন অবধারিত হয়ে পড়ছে। যে কারণে চট্টগ্রামে শিল্প স্থাপনে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন অনেক উদ্যোক্তা।
কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কর্তৃপক্ষ বলছে, মাতারবাড়ির দু'টি এলএনজি টার্মিনালের একটিতে সংস্কার কাজ চলায় এই সংকট তৈরি হয়েছে।





