আজ (বুধবার, ১৪ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকে সমসাময়িক বিষয়ে আয়োজিতে সংবাদ সম্মেলনে দুবাই থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘ডলারের দর খোলা বাজারে ছাড়লে দু’একটি কোম্পানি বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সেই সাথে বাজার স্বাভাবিক রাখতে ৫০ কোটি ডলার হাতে রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।’
গভর্নর জানান, মূল্যস্ফীতি ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকবে। সেই সাথে ব্যাংকগুলোও ঘুরে দাঁড়াবে। সেক্ষেত্রে আইএমএফের ঋণের প্রয়োজন এখন নেই। কিন্তু বিদেশি বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিকভাবে আস্থা বৃদ্ধিতে আইএমএফের শর্ত মানা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে বাংলাদেশের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালে। তা থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ৩টি কিস্তিতে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। এই ঋণের বাকি আছে আরো ২৩৯ কোটি ডলার। যা আগামী ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে পাওয়া যাবে।
তবে গত ১৬ বছর পতিত আওয়ামী লীগে সরকারের আমলে লুটপাট ও আত্মসাতের মাধ্যমে ২৮ লাখ কোটি টাকার বেশি পাচার করা হয়েছে। ফলে এক সময়ের ৪২ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ নেমে আসে তলানিতে। এতে ভেঙে পড়ে অর্থনীতি ও আর্থিক খাত। অস্থিরতা দেখে দেয় ডলার বাজারে। ফলে এর ১৩০ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। আর আমদানি ও বিদেশি দায় বোঝা হয়ে চাপে ফেলে।
কিন্তু ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর সংস্কার শুরু হয় এ খাতের। তবে এর জন্য প্রয়োজন পড়ে আরো বাড়তি ডলারের। তাই চলতি ঋণের সাথে অতিরিক্ত ডলার চাওয়া হয় আইএমএফের কাছে। সেই সাথে সহায়তা দিতে এগিয়ে আসে অন্যান্য বিদেশি দাতারা। এ ছাড়া নজরদারি বাড়িয়ে স্বাভাবিক করা হয় ডলার বাজার।
তবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের আগে যেসব শর্ত পূরণ করতে হবে, সেগুলো বাস্তবায়ন নিয়ে দেখা দেয় সংশয়। বিশেষ করে ডলার দর বাজারভিত্তিক ও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য পূরণ না করায় ঋণ পাওয়া নিয়ে শঙ্কা জাগে। তাই সফর শেষ করলেও আইএমএফের সাথে দু’মাস ধরে আলোচনা চলে।
অবশেষে আগামী জুনে ঋণের দুই কিস্তি ছাড়ে সম্মতি জানিয়েছে আইএমএফ। তার জন্য ডলারের দর খোলা বাজারে ছাড়তে রাজি হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।