গত কয়েক দফায় বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া মুদ্রানীতি ফলপ্রসূ হয়নি, বরং বেড়েছে মূল্যস্ফীতি। বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থে মুদ্রানীতি করায় দেশের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি বলে এবার অভিযোগ তুলেছে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, গেল ১৫ বছরে যারা বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বে ছিলেন তারা বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করতে নীতির সাথে সাংঘর্ষিক পদক্ষেপ নিয়েছে। এতে বেড়েছে মন্দ ঋণ ও খেলাপি।
সিপিডি'র ফাহমিদা খাতুন বলেন, 'ব্যাংকের কর্মকর্তা ও প্রশাসনের মধ্যে যারা রয়েছে, ব্যাংকে যে লোন স্যাংশনের প্রক্রিয়া, লোন পুনঃতফসিল করা এবং ব্যাংকের ভেতরে নিজেদেরও অনেক দুর্বলতা রয়েছে। আন্তর্জাতিক কিছু মানদণ্ড বেজেল থ্রি সূচকগুলো পরিপালনে দুর্বলতা রয়েছে।'
সরকারি ব্যাংকের অনেক সিদ্ধান্তের নিয়ন্ত্রণ অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে। যা পরিবর্তন করে সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংকের একক তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে নিয়ে আসার পরামর্শ সিপিডি নির্বাহী পরিচালকের।
ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, 'বাংলাদেশ ব্যাংকের জবাবদিহিতাটা কে করবে। সুতরাং অর্থ মন্ত্রণালয়ের যে দায়িত্ব আছে সেটা তারা করবে। আরও বেশি ধরনের দুর্নীতি হলে এসিসিতে। বিভিন্ন ধাপে ধাপে সেগুলোর প্রক্রিয়া আছে। বিভিন্ন সময় কোন স্ক্যাম হলে বাংলাদেশ ব্যাংক সেটা গেস করতে পারে না। তারা বলে এসিসি করবে। এই যে দায়িত্বেরও কিন্তু কোনো স্পষ্টতা নেই যে কে কোনটা করবে। এগুলোর মধ্যে স্বচ্ছতা আনতে হবে।'
গবেষণা সংস্থা সিপিডি আরও বলছে, যারা ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি ও একাধিক কোম্পানির নামে ঋণ ফেরত দিচ্ছে না, তাদের সম্পদ জব্দ করে অর্থ ফেরানো হোক ব্যাংকে। নাম প্রকাশ করা হোক ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের। একই সাথে বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বের হতে ব্যাংকিং কমিশন করার কথা জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানভিত্তিক বীমা ও পুঁজিবাজার প্রতিযোগিতা বাজার কাঠামোর সাথে সাংঘর্ষিক বলেও দাবি সিপিডির।
ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক বীমা ও পুঁজিবাজার গড়ে ওঠা বন্ধ করতে হবে। কোনোভাবেই কোনো একটা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক কোনো খাত কোনো দিনই আসলে টিকতে পারে না। এবং এটি প্রতিযোগিতামূলক একটি বাজার কাঠামোর সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।'
ব্যাংক বোর্ড মেম্বার ও পরিচালক নিয়োগে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে করার কথা জানায় সিপিডি।