জনগণের আয় থেকে প্রত্যক্ষ কর, পণ্য থেকে ভ্যাট আর আমদানি থেকে শুল্ক নিয়ে আগামী একবছর এনবিআর আহরণ করবে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। আর সরকারের সর্বমোট রাজস্ব আয় হবে ৫ লাখ ৫১ হাজার কোটি টাকা। এই আয়ের বাইরে প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেটে ঘাটতি মেটাতে ঝুঁকতে হবে দেশি-বিদেশি ব্যাংক থেকে ঋণের দিকে। যদিও এ ঋণ বোঝা নয় বলছে সরকার। তবে অভ্যন্তরীণ আয়ের সক্ষমতা ও ব্যাংক ঋণ নিয়ে অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি কতটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে সরকার, সেটিই এখন সব মহলের আলোচনায়।
বিদায়ী অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল সাড়ে ৯ শতাংশেরও বেশি। নতুন অর্থবছরের বাজেটে তা সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার আশ্বাস দেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অভ্যন্তরীণ ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। যার মধ্যে ব্যাংক থেকে আসবে ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা। তবে এ ঋণ সার্বিক মূল্যস্ফীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।
আইসিএবি'র সভাপতি মো. ফোরকান উদ্দীন বলেন, '১ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে অর্থায়ন করার প্রস্তাবন করা হয়েছে। যা মূল্যস্ফীতির কারণ হতে পারে।'
সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, 'একদিকে বলা হচ্ছে আমরা কর আদায় করতে চাই। আরেকদিকে বলা হচ্ছে যারা বিভিন্নভাবে কর ফাঁকি দিয়েছে; তারা কম কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করতে পারবে।'
ঋণ, কালো টাকা সাদার সুযোগ ও করপোরেট করহারসহ নানা বিষয় উঠে আসে আইসিএবি ও সানিমের মতো অর্থনৈতিক বিশ্লেষন প্রতিষ্ঠানগুলোর শনিবারের আলোচনায়। বাজেট পরবর্তী পর্যালোচনায় বক্তারা বলেন, করপোরেট কর হারে শুধুমাত্র পুঁজিবাজারের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হলেও বিগত বছরগুলোর অভিজ্ঞতা বলছে এ পদ্ধতি অকার্যকর। কালো টাকা সাদা করার যে সুযোগ রাখা হয়েছে, সেটিও অস্পষ্ট।
সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, 'অনেক মন্ত্রণালয় ২০-২২ শতাংশ বরাদ্দ পেয়েছে। বর্তমানে আমরা যেহেতু একটা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। তাই ওই জায়গাগুলোতে ব্যয় আরও কাটছাট করা যেতো।'
তবে এনবিআর তার ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারলে অর্থবছরে জিডিপির হার ১০ শতাংশে উন্নিত করার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও আশার বাণি শোনান বক্তারা।