প্রথম নিলামে বিগত সরকারের এমপিদের আমদানি করা ল্যান্ডক্রুজার মডেলের প্রতিটি গাড়ির সংরক্ষিত মূল্য নয় কোটি ৬৭ লাখ টাকা ধরা হলেও আটটি গাড়ির দাম উঠেছে নামমাত্র। এরমধ্যে গাজীপুর-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আখতারউজ্জামানসহ দুই এমপির নয় কোটি টাকা মূল্যের একেকটি গাড়ির দাম উঠেছে মাত্র এক লাখ টাকা করে। যা কাস্টম হাউসের নির্ধারিত মূল্যের শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ।
তারকা এমপি তারানা হালিম ও সংরক্ষিত আসনের এমপি জান্নাত আরা হেনরির প্রতিটি গাড়ির দাম উঠেছে পাঁচ লাখ টাকা। যা সংরক্ষিত মূল্যের এক শতাংশেরও কম। এছাড়া সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদ ও নেত্রকোণা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসানের গাড়ি কিনতে ক্রেতারা দর দিয়েছেন ৩০ লাখ টাকা করে। যা সংরক্ষিত মূল্যের মাত্র ৩.১০ শতাংশ।
২০২২ সালে জারি করা এনবিআরের সর্বশেষ স্থায়ী আদেশ অনুযায়ী, প্রথম নিলামের চেয়ে দ্বিতীয় নিলামে বেশি দর উঠলেই আইন অনুযায়ী পণ্য বিক্রির সুপারিশ করতে বাধ্য নিলাম কমিটি। এক্ষেত্রে প্রথম নিলামে এক লাখ টাকা উঠলে দ্বিতীয় নিলামে এর চেয়ে কিছু বেশি উঠলেও বিক্রির সুপারিশ করতে হবে। এই অবস্থায় দ্বিতীয় দফায় নিলামে গাড়ির যথাযথ দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। তাই রাজস্ব হারানোর আশঙ্কায় ২৪ এমপির গাড়ি দ্বিতীয় দফা নিলামে তোলার আগে এনবিআরের মতামত চেয়ে দেয়া হয়েছে চিঠি।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার সাকিব হোসেন বলেন, 'আমরা এনবিআরের একটা ইনস্ট্রাকশন চেয়েছি যে, দ্বিতীয় নিলামের ক্ষেত্রে কোনো পার্সেন্টেজ তারা ঠিক করে দিবে কি না। বা কোনো ন্যূনতম মূল্য তারা ঠিক করে দিবে কি না যে, এই মূল্যের উপরে গেলেই আমরা বিক্রি করতে পারবো। কারণ দেড় লাখ টাকায় তো আর নয় কোটি টাকার গাড়ি বিক্রি করা যায় না। রাজস্বের ক্ষেত্রে অনেক বেশি ঘাটতি হয়ে যায়।'
রাজস্ব ক্ষতি ঠেকাতে আইন সংশোধনের পক্ষে হলেও বিক্রয়ের উপযোগী দাম নির্ধারণের পরামর্শ বিডারদের।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিলাম ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. এয়াকুব চৌধুরী বলেন, 'দশ কোটি টাকার গাড়ি প্রথমবার এক লাখ টাকা, পরেরবার দুই লাখ টাকা বললেই দিয়ে দিবেন আপনি? বাজার মূল্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রথম বিট থেকে বেশি হলে, যদি ৬০ শতাংশ না হোক ২০ বা ৩০ শতাংশও কভার না করে তাহলে কেন দিবেন এটা?'
এর আগে গত জানুয়ারিতে আওয়ামী সরকারের সাবেক ২৪ এমপির ৩শ' কোটি টাকা মূল্যের ২৪টি গাড়ি বিক্রির জন্য প্রথম দফায় নিলামে তোলা হয়। এনবিআরের নির্দেশনা পাওয়ার পর এসব গাড়ি দ্বিতীয় বার নিলামে তোলা হবে।