দেশের সবচেয়ে পুরোনো গ্যাস ক্ষেত্র সিলেটের হরিপুর । ১৯৫৫ সালে দেশের প্রথম গ্যাস ক্ষেত্র হিসেবে এটি আবিষ্কৃত হওয়ার পরপরই মূলত এই অঞ্চলে প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানে সচেষ্ট হয় রাষ্ট্র।
তারই ধারাবাহিকতায় সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের ১৬টি কূপ থেকে গত ১ বছরে তাদের উৎপাদন ৮৫ মিলিয়ন ঘনফুট থেকে ১৩৭ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত করেছে। সেই সঙ্গে নতুন করে ২০২৬ সালের মধ্যে আরো ৯০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সংযুক্তে পরিকল্পনা রয়েছে।
এসজিএফএলের এমডি প্রকৌশলী মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এখানে আগে ৮০ থেকে ৮৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আমরা দিতাম। এক বছরে আমরা যে প্রকল্পগুলো করেছি এর বিনিময়ে কিন্তু আমরা ৮৫ থেকে ১৩৭ মিলিয়নে আনতে পেরেছি। আশা করছি যে আমরা আরো ৬০ মিলিয়ন যুক্ত করতে পারবো।’
দেশে চাহিদার চেয়ে গ্যাসের জোগান সংকট দূর করার নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি ২০২৫ এর এপ্রিলের মধ্যে সিলেটে ১০নম্বর কূপ থেকে প্রতিদিন ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট আর এর বাইরেও সিলেট গ্যাস ফিল্ডের আওতাধীন আরো দুটি পুরোনো কূপের সংস্কার কাজ শেষের পথে রয়েছে কোম্পানিটির।
সেটি হয়ে গেলে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে আরো ৩০ মিলিয়ন সহ দৈনিক প্রায় ৫৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস নতুন করে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সব কাজ সময়সীমার মধ্যে শেষ হলে শুধু সিলেট গ্যাসফিল্ডই জাতীয় গ্রিডে ২০২৬ সালের মধ্যে প্রতিদিন ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতে পারবে।
প্রকৌশলী মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘ডিমার্কেশন শেষ হয়ে গেলে আমাদের বুঝিয়ে দিবে। বুঝিয়ে দেয়া হলে আমরা এ তিন কিলোমিটার পাব। এটুকু পেলে এপ্রিলের মধ্যে আমরা ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে দিতে পারবো।’
বিগত ৫ বছর আগে সিলেট গ্যাসফিল্ডের যে উৎপাদন সক্ষমতা ছিল তার থেকে এখন উৎপাদন ২.৭ গুণ বেড়েছে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে যে প্রক্রিয়ায় গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে সেটা যদি আরো আধুনিক হয় তাহলে সহজেই এর উৎপাদন আরো বৃদ্ধি করা সম্ভব।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম এবং মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখন সময় এসেছে আমাদের বিদ্যমান যেসব জ্বালানি তেল খনি রয়েছে সেগুলোকেও কীভাবে আরো উন্নত করা যায়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হাওলাদার বলেন, ‘সময়ের সাথে সাথে যদি বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং ফিল্ডগুলো উন্নত করা হয় তাহলে বর্তমানে দেশে যে সংকট রয়েছে তার অনেকটাই দূর হবে।’
সিলেট গ্যাসফিল্ড বর্তমানে ১৬টি কূপের মাধ্যমে বছরে ৩৩ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করছে তার সাথে সাথে জোগান দিচ্ছে ৩৭ হাজার ২৪৭ ব্যারেল কনডেনসেট ও এনজিএল।
তাছাড়া ২০২৩ -২৪ অর্থবছরে লাভজনক এ প্রতিষ্ঠানটি সরকারের কোষাগারে জমা দিয়েছে প্রায় ৭৭৯ কোটি টাকা ।