৭৯তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অধিবেশনের মূল পর্বের দ্বিতীয় দিন ছিলো বাংলাদেশের জন্য প্রাপ্তির দিন। উন্নত দেশ ও বিভিন্ন দাতা সংস্থা প্রধানরা এদিন নানা কিছু দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানকে।
সম্মেলনে যোগ দিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল করতে ইউনূস সরকার আইএফএম, বিশ্বব্যাংক ও এডিবির মতো দাতা সংস্থা প্রধানদের সাথে বৈঠক সেরেছেন। যেখানে দাতা সংস্থাগুলো বাংলাদেশে সহায়তা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘আইএমএফ প্রতিনিধি দল এখন বাংলাদেশে সফরে রয়েছে। আর বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ পুনর্গঠনে এ বছর সাড়ে তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা করছে।’
তিনি বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের ঋণ মানে হচ্ছে ইট হেলপস বাংলাদেশ ইকোনমি ইন অ্যা বিগার ওয়ে।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘সব মিলিয়ে দুই বিলিয়ন ডলার অ্যাডিশনাল আর ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন আগের প্রোগ্রামিংয়েই ছিল। এটাকে রিপারপাস করে এখানে আনা হয়েছে।’
এদিন ড. ইউনুস বৈঠক করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে। যেখানে চীন সরকার বাংলাদেশে নতুন করে সৌর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখান পলে জানান প্রেসসচিব।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘চীন অনেকগুলো বিষয়ে বাংলাদেশের ট্রেড বাড়াতে চায়, ইনভেস্টমেন্ট বাড়াতে চায়। এবং বাংলাদেশের সাথে যে কম্প্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ আছে সেটাকে আরো সুদৃঢ় করতে চায়। তারা এটাকে খুবই হাই ইমপরট্যান্স দিচ্ছেন।’
জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করেন মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থাও। যেখানে আওয়ামী লীগ শাসনামলে গুমের বিষয়টি উঠে আসে। প্রত্যেকটি গুমের তদন্ত চেয়ে আয়না ঘরের রহস্য উদঘাটনের কথা জানায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন।
এ বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, যারা গুমের শিকার হয়েছে, এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিংয়ের শিকার হয়েছে তাদের ব্যাপারে যেন জাস্টিস অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিবিলিটি এনসিউর করা হয়। এর মূল একটা বিষয় হচ্ছে, এই যে বাংলাদেশে আয়না ঘরগুলো ছিল এ বিষয়ে যেন আরো পরিপূর্ণ তদন্ত হয়।’
এদিকে জাতিসংঘ সম্মেলনে মূল পর্বের দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশ-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সার্ক নিয়ে সুখবর দেন ডক্টর মুহাম্নদ ইউনুস। দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক রাজনীতি, অর্থনীতি আরো শক্তিশালী করতে সার্ককে তিনি পুনরুজ্জীবিত করার কথা বলেন। বৈঠকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে পোষাক ও চামড়া শিল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখান বলে জানান প্রেস উইং।
এছাড়া এদিন নেপাল ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তি, সামাজিক বাণিজ্য ও জলবায়ু বিষয়ক কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস।