রাজা,বাদশা, রকিভাই। নামের মতোই এদের একেকজনের রাজকীয় চেহারা। কোরবানির বেচাকেনা আকর্ষণীয় করতে গবাদিপশুর এমন নাম রেখেছেন খামার মালিক। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার এই খামারে আসন্ন কোরবানি উপলক্ষে ছোট বড় ৭০টি গরু প্রস্তুত করা হয়েছে।
খামারি জানান, অন্তত ২০ দিন আগেই খামারে পশু বেচাকেনা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ৮০ শতাংশ গরুই বিক্রি হয়ে গেছে। শিগগিরই বাকি গরু বিক্রি হয়ে যাবে বলে আশাবাদী তারা।
একই অবস্থা চট্টগ্রামের ছোট বড় প্রায় ৪০০ খামারে। হাট বসার আগেই খামারগুলোতে জমজমাট বেচাকেনা। অনেক ক্রেতা খামারে এসে অগ্রিম কিনে রাখছেন পছন্দের পশু। আছে অনলাইনের বেচাকেনা সুবিধাও। এ ছাড়া তীব্র গরম আর হাটের বাড়তি ঝামেলা এড়াতে অনেকেই এখন খামারমুখী।
প্রাণিসম্পদের হিসাবে, গত অর্থবছরে দেশে মাংস উৎপাদন হয়েছে ৮৭ লাখ টন। ব্রাহামাসহ বিভিন্ন উন্নত জাতের গরু পালন, খামার সম্প্রসারণের কারণে গত কয়েক বছর ঈদুল আজহায় গরু আমদানি করতে হয়নি।
তবে খাদ্য, ওষুধসহ লালন পালনে খরচ বাড়ায় প্রতিবছরই পশুর দাম ১৫ থেকে ২০ শতাংশ করে বাড়ছে। এতে বিপাকে পড়ছেন ক্রেতা, খামারি উভয়েই।
ক্রেতাদের একজন বলেন, 'পছন্দতো হয়েছে কিন্তু দাম অনেক বেশি।'
বারাকা ফার্মইয়ার্ডের স্বত্বাধিকারী খুররাম নাঈম বলেন, 'দাম একটু বেশি কারণ গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর যা ছিল এবার আরও বেড়েছে। আমাদের গরু পালনে খরচও বেড়েছে।'
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য মতে, চট্টগ্রামে এ বছর কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৮ লাখ ৮৫ হাজার। কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ৮ লাখ ৫২ হাজার। ঘাটতি রয়েছে ৩৩ হাজার পশু। তবে পার্শ্ববর্তী জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি বান্দরবানের বাড়তি উৎপাদন দিয়ে ঘাটতি পূরণ সম্ভব বলছেন প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রামে ঈদুল আজহায় এবার সব মিলিয়ে পশু বিক্রি থেকে আয় হবে ৪ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, 'পশুর চাহিদা নিয়ে টেনশনের কিছু নেই আমাদের পর্যাপ্ত কোরবানির পশু রয়েছে।'
প্রাণিসম্পদের হিসাবে, গত বছর চট্টগ্রামে কোরবানি হয়েছে প্রায় ৭ লাখ পশু। এবার ১ লাখ ৮৫ হাজার গরুর চাহিদা বেড়েছে।