ইরান-ইসরাইলের মধ্যে উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ শুরু হতে পারে, এমন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে পুরো বিশ্বে। এ অবস্থায় সামরিক শক্তিতে কাছাকাছি অবস্থানে থাকা ইসরাইল ও ইরান, কে কার কতটুকু ক্ষতি করতে পারবে তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের পরিসংখ্যান অনুয়ায়ী, যুদ্ধ সক্ষমতায় ইরান এগিয়ে থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্রদের সহযোগিতা বাড়তি সুবিধা দেবে ইসরাইলকে। বিপরীতে বৈশ্বিক তেল বাণিজ্যের জন্য গুরুত্পূর্ণ হরমুজ প্রণালীকে যুদ্ধে প্রধান ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারে ইরান। ইসরাইলি মালিকানাধীন জাহাজ জব্দ করে সে বিষয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিতও দিয়েছে দেশটি। এর আগে প্রয়োজন হলে প্রণালীটি বন্ধেরও হুমকি দিয়ে রেখেছে তেহরান।
যুদ্ধ উত্তেজনার মধ্যে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সবচেয়ে ভালো মানের অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৯২ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু বৈশ্বিক তেল বাণিজ্যে হরমুজ প্রণালীর প্রভাব এতো বেশি কোনো? এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখা যায় প্রতিদিন গড়ে ২ কোটি ব্যারেল তেল ও তেলজাতীয় পণ্য রপ্তানি হয় এই রুট দিয়ে। অর্থাৎ পৃথিবীতে যে পরিমাণ জ্বালানি তেল রপ্তানি হয় তার পাঁচ ভাগের একভাগ যায় হরমুজ প্রণালী দিয়ে।
এখানেই শেষ নয়-প্রণালীটি পারস্য উপসাগরকে ওমান উপসাগর এবং আরব সাগরের সাথে সংযুক্ত করায় বিশ্ব বাণিজ্যে বড় ভূমিকা রাখে। কারণ পারস্য উপসাগর দিয়ে আসা তেলবাহী জাহাজের ৮০ শতাংশের বেশি যায় হরমুজ প্রণালী দিয়ে। আর এই প্রণালী দিয়ে যাওয়া বেশিরভাগ তেলের গন্তব্য এশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। এরমধ্যে জাপানের আমদানি করা তেলের চার ভাগের তিন ভাগ আর চীনের অর্ধেক তেলই আসে হরমুজ প্রণালি হয়ে। এতে স্পষ্ট যে একই সঙ্গে ভূ-রাজনীতি ও বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালী।
এদিকে আকাশ পথের বাণিজ্যেও লেগেছে ভাটার টান। চলমান উত্তেজনার জেরে ইরান, ইসরাইল, লেবানন ও ফিলিস্তিন ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে ভারত, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও পোল্যান্ড।