আসছে বাজেটের অন্যতম চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি কমানো বনাম উন্নয়ন মুখোমুখি অবস্থান। এছাড়া ব্যাংকিং সংস্কারের পাশাপাশি বাজেটে করের চাপ ব্যক্তি পর্যায়ে না বাড়িয়ে করের আওতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। একই সঙ্গে বিনিময় হারের ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
আলোচনায় অংশ নেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), ঢাকা চেম্বার, মেট্রোপলিটন চেম্বার ও বিকেএমইএর নেতৃবৃন্দসহ ব্যবসায়ী নেতারা।
বাজেট ও সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আসছে বাজেটের আকার হবে ৮ লাখ কোটি টাকার। নবম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা তৈরি করার কাজ শুরু করেছি। মূল্যস্ফীতি কমানোর একটা প্রক্রিয়া হলো সুদহার বাড়ানো। সরকার কর জিডিপি রেশিও বাড়াতে আগ্রহী।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রকৃত অর্থে মুক্ত অর্থনীতির অনুসারী না, আমরা কল্যাণকর অর্থনীতির অনুসারী। কল্যাণ অর্থনীতিতে চলছে বাংলাদেশ।’
আগামী বাজেটে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিফলন ঘটবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের ১১টি বিষয় বাজেটে প্রতিফলিত হয়। এর বাইরেও সরকারের কিছু বিষয় আছে সেগুলোও মাথায় রেখে বাজেট করা হবে।’
মুদ্রা বিনিময়ের ঊর্ধ্বগতি প্রভাব ফেলছে ব্যালেন্স অব পেমেন্টে। প্রতিযোগিতা চলছে আমদানি পণ্যের মূল্য আর কাটছাঁটে রপ্তানির প্রণোদনায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজেটে কর জাল বেসরকারি খাতের ওপর ঋণের চাপ ও করের চাপ এ খাতের প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে। যার প্রভাব পড়বে কর্মসংস্থানে।
ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ‘ব্যবসার ওপর ট্যাক্সের চাপ বাড়লে অর্থনীতি নিতে পারবে না। এ বছর ব্যবসা করতে না পারলে ট্যাক্স ও কর্মসংস্থান কমবে।’
একইসাথে ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিতে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
র্যাপিডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘ব্যাংকে ঋণের সুদের উচ্চ হার আর দু’বছরের এই আঁটসাঁট নীতির সঙ্গে প্রতিযোগিতার প্রবৃদ্ধি এখন প্রায় একই লাইনে সহোদর। উচ্চ প্রবৃদ্ধির আকাঙ্ক্ষা এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানো ও সরকারি ব্যয় কমানো মুখোমুখি অবস্থানে থাকবে।’
এনবিআরের কর আদায় প্রক্রিয়া অনলাইন বা ডিজিটালাইজেশনের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, এনফোর্সমেন্ট বাড়াতে হবে সব প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়েও মানুষের আয় বেড়েছে, করদাতা বাড়েনি। কর খেলাপিদের বা দুর্নীতিগ্রস্থদের বাড়তি সুযোগ দেয়া সাধারণ করদাতাদের নিরুৎসাহিত করে।’