সারা দিনের রোজা শেষে ইফতারে হালকা ফলমূল খেতে চান রোজাদাররা। তাই রমজানে ফলের চাহিদাও বাড়ে। এই বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে রোজার আগে চট্টগ্রামের পাইকারি ও খুচরা বাজারে আকাশ ছুঁয়েছে আমদানি করা সব ধরনের বিদেশি ফলের দাম।
রোজায় বেশি চাহিদা থাকে আপেল, কমলা,মাল্টা ও আঙ্গুরের। প্রতি ক্যারেট মাল্টা ,আপেল, আঙ্গুরের দাম বেড়েছে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত।
বিক্রেতারা বলেন, 'কিছুদিন আগে ক্যারেটপ্রতি দাম ছিল ৩০০০-৩১০০ টাকা। এখন সেটা ৪৩০০-৪৪০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।'
আরেকজন বলেন, 'গ্রিন আপেল বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৬শ' টাকা করে কিন্তু আগে বিক্রি হতো ৫ হাজার ২শ' টাকা করে।'
ক্রেতারা বলেন, 'আমাদের জন্য সংকট হয়ে গেছে সব ফলের দাম। যদি এভাবে বাড়ে তাহলে আমরা কিভাবে চলবো?'
চারদিন আগেও ফলমন্ডির পাইকারি বাজারে ১৪ কেজির ১ ক্যারেট মাল্টা বিক্রি হয়েছে ৩২০০ টাকায়। চায়না মাল্টা সিজন শেষ হওয়ায় বর্তমানে মিশরীয় মাল্টা প্রতি ক্যারেট বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৪শ' টাকায়। পাইকারিতে বাজারে প্রতি কেজি মিশরীয় মাল্টা ৩১৪ টাকার মাল্টা খুচরা বাজারে গিয়ে ঠেকেছে সাড়ে তিনশো' টাকায়।
একইভাবে প্রতি ক্যারেট ভারতীয় সাদা আঙ্গুর কয়েক দিন আগে ৩হাজার ৭০০ টাকায়, বিক্রি হয়েছে। ক্যারেটে প্রায় তেরোশ' টাকা বেড়ে বর্তমানে চলছে ৫ হাজার টাকায়। প্রতি কেজিতে সাদা আঙ্গুর ৫০ টাকা, ও কালো আঙ্গুরের দাম বেড়েছে সবোর্চ্চ ৮০ টাকা পর্যন্ত।
নাগালের বাইরে আপেল ও কমলা। দক্ষিণ আফ্রিকার গোল্ডেন আপেল বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ থেকে ৩৬০ টাকায়, আর চায়না কমলা বা মেন্ডারিন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়।
ফল বিক্রেতারা বলছেন, প্রতি কেজিতে তাদের ৯০ থেকে ১১০ টাকার বেশি শুল্ক কর দিতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে ডলারের উচ্চমূল্যের কারণে আমদানি ব্যয় বাড়ায় ফলের দাম বেশি পড়ছে, তাই অনেকেই আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন।
পাইকারি বিক্রেতা বাবুল মিঞা বলেন, 'আঙ্গুর, কমলা এগুলোয় ইন্ডিয়ান বর্ডারে বাংলাদেশ সরকার শুল্ক বাড়িয়েছে। শুল্ক বাড়ানোর কারণে আমরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছি।'
ফল আমদানিকারক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘১১৪ শতাংশ সরকার ট্যাক্স নিয়ে যায়। এ কারণে আমদানিকারকরা আমদানি সীমিত করে দিয়েছে। চাহিদা বেশি, ডলার সংকট, এলসি পাওয়া যাচ্ছে না। একটা ফল কিনতে লাগে ১২শ' টাকা। আর সরকারকে ট্যাক্স দিতে হয় ১৯শ' টাকা। এক কেজি খেজুরে ২৭০ টাকা ট্যাক্স। পাবলিক খাবে কিভাবে?’
এ অবস্থায় দোকানে দোকানে ঘুরছেন অনেক খুচরা ক্রেতা বিক্রেতা। এতো বাড়তি দামে ফল কিনে বিক্রি সম্ভব নয় বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
একজন বলেন, 'দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের উপর বাড়তি চাপ পড়ে গিয়েছে।'
এদিকে দেশি ফলের দাম সহনীয় থাকলেও রমজানকে সামনে রেখে দাম বেড়েছে। মৌসুমি ফল তরমুজ প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে সাড়ে তিনশো টাকায়।'