আন্তঃসীমান্ত নদী ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও গঙ্গাধর মিশেছে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নে। এর সাথে মিলেছে শিয়ালদহ ও বোয়ালমারী নামের আরও দুই নদী। এই ৫ নদীর মিলিত ধারার পাড় যাত্রাপুরে শতবছর আগে গড়ে ওঠে জেলার অন্যতম বড় হাট।
সদর, ভূরুঙ্গামারী, নাগেশ্বরী, উলিপুর, চিলমারী এবং রৌমারী উপজেলার নদীগুলোর অভ্যন্তরে দুই শতাধিক দ্বীপচর রয়েছে। যেখানে প্রায় ৬০ হাজার পরিবারের অন্তত তিন লাখ মানুষ বাস করেন।
চরে প্রাকৃতিকভাবে গৃহপালিত পশু-পাখি পালন করা হয়। এখানে আবাদ হয় ধান, পাটসহ নানা ফসল। সপ্তাহের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার এসব বিক্রির জন্য নৌকায় করে যাত্রাপুরের হাটে নিয়ে আসা হয়।
স্থানীয়রা বলেন, ‘আমাদের গৃহপালিত পশু-পাখি কিংবা উৎপাদিত ফসল এখানেই বেচাকেনা করি। আবার যা কিছুর প্রয়োজন হয় এই হাট থেকেই আমরা কিনি। প্রায় কয়েকটি উপজেলার ২০০টি চর থেকে হাজার হাজার মানুষ এই হাটে আসে।’
হাটের ইজারাদার বলেন, ‘৫৬ লাখ টাকা দিয়ে এই হাটের ইজারা নিয়েছি। প্রতি হাটে দুইশো’র বেশি গরু, ছাগল বিক্রি হয়।’
পাঁচ একর আয়তনের হাটটিতে ৫০০টি স্থায়ী ও দুই হাজারের মতো অস্থায়ী দোকান রয়েছে। এর মধ্যে গাদাগাদি করে বেচাকেনা চলে। এমন অবস্থায় জায়গাটির পরিধি বৃদ্ধির কথা জানান সংশ্লিষ্টরা।
যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল গফুর বলেন, আমরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলছি। আশা করি, এই হাটের জায়গা আরও বৃদ্ধি পাবে। তাহলে চর অঞ্চলের মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও প্রসার লাভ করবে।
কুড়িগ্রাম সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুশফিকুল আলম হালিম বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুমে সমস্যা না হলেও বর্ষায় হাটে পানি উঠে যায়। এ কারণে ব্যবসায়ীদের অসুবিধাও হয়। আমরা সমস্যাটি সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’
চলতি বছর যাত্রাপুর হাট থেকে ২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ইজারা পেয়েছে সরকার। যেখানে প্রতি হাটে অন্তত ১০ কোটি টাকার পণ্য বেচাকেনা হয়।