লাভজনক হচ্ছে বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন

0

লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রাঙামাটির কাপ্তাই বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন। একসময় তারা গাছের বৈদ্যুতিক খুঁটি, রেলের স্লিপার, সেতুর পাটাতন তৈরি করলেও এখন আধুনিক মানের কাঠের আসবাবপত্র বানাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাপক বনায়ন থাকায় ১৯৫৯ সালে রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে একশ' একর জায়গা নিয়ে বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন তৈরি করা হয়। এর শুরু থেকে গাছের বৈদ্যুতিক খুঁটি, রেলের স্লিপার ও সেতুর পাটাতন তৈরি করে লাভজনক অবস্থানে ছিল এই প্রতিষ্ঠান। কিন্তু গাছের যোগান কমে যাওয়া আর আধুনিক প্রযুক্তির ধাতব উপাদানের ব্যবহার বাড়ায় লোকসানে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি।

ক্ষতি এড়াতে কৌশল বদলায় বিএফআইডিসি। ২০১৬ সাল থেকে আসবাবপত্র নির্মাণ শুরু করে। এর ৪ বছর পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি লাভের মুখ দেখছে।

এসব আসবাবপত্রের প্রধান কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে জীবনচক্র হারানো বাগানের রাবার গাছ। সাথে মিলছে নিলামে পাওয়া বনবিভাগের জব্দকরা সেগুন, গামারিসহ বিভিন্ন কাঠ।

কারখানায় গাছ চিড়াইয়ের পর বৈজ্ঞানিক উপায়ে সিজনিং ও ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে আসবাপত্রের স্থায়ীত্ব ৫০ থেকে ৬০ বছর বাড়ানো হচ্ছে। পরিবেশবান্ধব ও টেকসই হওয়ায় দিনদিন বাড়ছে এসব কাঠের চাহিদা। মূলত কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানই এর প্রধান ক্রেতা।

একজন ব্যবসায়ী বলেন, 'এসব কাঠের স্থায়ীত্ব এতো ভালো যে ৪০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এ কাঠে কোনো ঘুন বা পোকা ধরবে না। চাহিদা অনুযায়ী ক্রেতারা যেসব ফার্নিচার চায়, সে অনুযায়ী তৈরি করি।'

বর্তমানে এখান থেকে বছরে অন্তত ১০ কোটি টাকার আসবাবপত্র বিক্রি হচ্ছে। ৭৪ জন শ্রমিক-কর্মকর্তাদের বেতনসহ যাবতীয় ব্যয় পরিশোধের পরও গেলো অর্থবছরে প্রায় তিন কোটি টাকা লাভ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আসবাবপত্র সরবরাহে সরকারি অগ্রাধিকার পেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখা সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

রাঙামাটি কাপ্তাই বিএফআইডিসি ইউনিট প্রধান তীর্থ জিৎ রায় বলেন, 'গেলো অর্থবছরে শুধু রাবার গাছ থেকে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকার আসবাবপত্র বিক্রি করেছি। এ কাঠ অনেক ভালো, উন্নত ও পরিবেশবান্ধব। সরকারের সহায়তা পেলে আমরা এটিকে আরও বড় আকারে কিরতে পারবো'

এসএস