ঋতুরাজ বসন্তের সাজে সেজেছে প্রকৃতি। গাছের পাতায়, ডালে ডালে বসন্তের পরশ। গাঁদা ফুলেরাও সেজেছে বসন্ত আগমনে। ওরা আষ্টেপৃষ্ঠে একে অপরকে ছুঁয়ে নিজেদের রাঙিয়েছে।
হলুদ গাঁদাফুল, রাঙা পলাশফুল না হলে প্রিয়জনেরা খোপা বাঁধবেন না বলেই এই মৌসুমে ফুল নিয়ে তোড়জোড় চলে। ব্যাপক চাহিদা থাকায় চাষিরাও একটু বাড়তি সমাদর করে ফুলের।
প্রতিবছর বসন্ত, ভালোবাসা ও মাতৃভাষা দিবসের মতো দিনে ব্যাপক চাহিদা থাকে গাঁদা ফুলের। যার সিংহভাগের যোগানদাতা ঝিনাইদহের ফুল চাষিরা। এই মৌসুমেও জেলায় ২৫০ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়েছে।
সকাল থেকে ভ্যানে করে হাটে ফুল আসতে থাকে। আর ব্যাপারিরা সেগুলো স্তুপ করে রাখেন। এখানকার গাঁদাফুলের উপর নির্ভর করে অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে। কেউ মালা গেঁথে আয় করছেন, কেউবা শুধু ফুল পরিবহন করে সংসার চালাচ্ছেন। বিশেষ দিন আসলে তাদের দম ফেলবার ফুসরত থাকে না।
ফুল ব্যবসায়ীরা বলেন, 'উৎসব আসলে আমাদের এই ফুলটা বেশি চলে এবং মূল্যও বৃদ্ধি পায়। এছাড়া ১২ মাস টুকটাক চলে। সারাদেশে ঝিনাইদহের ফুলটা আমরা পৌঁছে দেই।'
ফুল চাষিরা বলছেন এখন সারা বছরই ফুলের চাহিদা থাকে। শহর এমনকি গ্রামের বাজারেও গড়ে উঠেছে দোকান। তবে সার-কীটনাশকের মূল্যবৃদ্ধিতে ভালো দাম পাওয়া নিয়ে কিছুটা শঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
চাষিরা বলেন, 'এখন বাজার একটু কম। বর্তমানে সারের যে দাম তাতে ফুল চাষিরা খুব বেশি লাভবান হতে পারছি না।'
এক বিঘা জমিতে যেখানে অন্যান্য ফুল চাষে খরচ হয় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। সেখানে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকায় হয় গাঁদা ফুলের চাষ হয়।
ভালোবাসা দিবসে ঝিনাইদহে ২ কোটি টাকার মত গাঁদাফুল বিক্রি হবে বলে আশা করছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আজগর আলী। বলেন, 'এটার চাষ পদ্ধতি সহজ, বেশি টাকা লাগে না। এই কারণেই গাঁদা ফুলের চাষটা বেশি হচ্ছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে ২ কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা করছি।'
গাঁদা ছাড়াও বিভিন্ন জাতের গোলাপ, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা, জারবেরা ও লিলিয়াম ফুলের চাষ হচ্ছে ঝিনাইদহে।