পাশাপাশি ঋণ পরিশোধে আর কোনো বাড়তি সুবিধা দেয়া হবে না। সেইসঙ্গে ব্যাংকিং সেক্টরে সুশাসন নিশ্চিতের মাধ্যমে শুন্যে নামিয়ে আনা হবে বেনামি ঋণ। এছাড়া ব্যাংকগুলোর আইন বিভাগকে শক্তিশালী করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
২০২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
খেলাপি ঋণ কমাতে ১১ দফা রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কোনো গ্রাহক ঋণ নিয়মিত পরিশোধ না করলে তাকে চিহ্নিত করা হবে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হবে খেলাপিদের। তারা নতুন করে জমি-বাড়ি-গাড়ি কিনতে পারবেন না, এমনকি খুলতে পারবেন না নতুন ব্যবসাও ।
আজ রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। পরে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন, ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের।
ডেপুটি গভর্নর জানান, ব্যাংকিং খাতে ২০২৬ সালে ৩০ জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণের হার সার্বিক ৮ শতাংশের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ও বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার যথাক্রমে ১০ ও ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া ব্যাংকিং খাতে কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে সীমাতিরিক্ত, বেনামি স্বার্থসংশ্লিষ্ট এবং জালিয়াতি, প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ বিতরণের পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে ১১ দফা রোডম্যাপ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে অর্থঋণ আদালতে ৭২ হাজার ৫৪৩ টি মামলা বিচারাধীন। যেখানে অনাদায়ী অর্থের পরিমাণ, ১ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। তাই ব্যাংকগুলোর বিদ্যমান লিগ্যাল বা আইন বিভাগকে শক্তিশালী করতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। বলা হচ্ছে, লিগ্যাল টিম শক্তিশালী হলে অর্থঋণ আদালতের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে।
আবু ফারাহ মো. নাসের বলেন, ব্যাংকিং আইন বজায় রেখে ও গত তিন বছরের শ্রেণিকৃত ঋণের তথ্য পর্যালোচনা করে ১১ দফার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করতে পরলে খেলাপি ঋণ কমে আসবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তিনি আরও বলেন, দুর্বল ব্যাংক সংস্কারের বড় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মূলধন খেলাপি ঋণসহ চারটি সূচকের মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করা হবে। সবল কোনো ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংক একীভূত হবে। গত ব্যাংকার্স সভায় ব্যাংকগুলোকে বলে দেয়া হয়েছে যারা দুর্বল তারা আগে থেকে প্রস্তুতি নেবে কার সঙ্গে একীভূত হবে। যদি কেউ এ ধরনের প্রস্তুতি না নেয় তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে একীভূত করে দেবে বলে জানান ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের।
পরীক্ষার মাধ্যমে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের পদন্নোতিরও নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে দুর্বল ব্যাংকের তালিকা করে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।