আব্দুর রহমানের ভাগ্য বদলের গল্পের শুরুটা ২০২১ সালে। দশম শ্রেণীতে উঠে করোনা মহামারির সময় সবাই যখন ঘরবন্দি তখন রাজমিস্ত্রী পিতাকে সংসারে সহযোগিতার জন্য কিছু একটা করার পরিকল্পনা করেন। অনলাইনে অনুপ্রেরণা ও বিভিন্ন খামার ঘুরে অর্জন করেন বাস্তব অভিজ্ঞতা।
পরবর্তীতে অল্প সংখ্যক ঝিনুক দিয়ে বাড়ির পুকুরে শুরু করেন মুক্তা চাষ। এরপর ৫০০ ঝিনুক দিয়ে বাড়ির ছাদে বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেন। বর্তমানে বেকার যুবকদের পরামর্শের পাশাপাশি দিচ্ছেন চাষের প্রশিক্ষণও। সরকারি সহযোগিতা পেলে প্রকল্প সম্প্রাসরণের পাশাপাশি আয় করতে চান বৈদেশিক মুদ্রাও।
আব্দুর রহমান বলেন, 'আমাদের গ্রাম অঞ্চলে দেখা যায় ঝিনুক হাঁস মুরগী খেয়ে নষ্ট করে। এটা থেকে যদি আর্থিকভাবে সাবলম্বী হওয়া সম্ভব হয় তাহলে কেন এটি আমরা করব না। সেখান থেকেই আমার উৎসাহ জাগে। মুক্তা চাষে আলাদা করে খাবার দিতে হয় না। মাছের সাথেই এটি হয়ে যায়।'
তার সফলতা দেখে এ কাজে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন এলাকার অন্যরাও। দূর-দুরান্ত থেকে অনেকেই আসছে তার খামারে প্রশিক্ষণ নিতে। বর্তমানে এ খামারে কর্মসংস্থান হয়েছে ২০ জনের। তাকে যুব সমাজের পথিকৃত হিসাবে দেখছে পরিবার ও এলাকাবাসী।
আব্দুর রহমানের পিতা মো. কবির হোসেন বলেন, 'বাংলাদেশ মৎস্য ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে কাজ শুরু করে। এখন এটা দিয়ে আমাদের সংসার ভাল চলছে।'
আব্দুর রহমানের এ উদ্যোগ বেকার যুব সমাজকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করবে বলে মনে করছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। এজন্য প্রশিক্ষণসহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস সংস্থাটির।
যশোরের যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, 'যত সুযোগ সুবিধা আছে তার সবকিছু দিতে প্রস্তুত আমরা। বিদেশে রপ্তানি করতে পারলে বৈদেশিক মুদ্রা আসার সম্ভাবনা আছে। তাকে দেখে এ এলাকায় এমনকি সারা দেশে এটি ছড়িয়ে পড়বে।
যশোরের অভয়নগর উপজেলার এক্তারপুর গ্রামের বাড়িতে শুরু হওয়া এ প্রকল্পে ৫০০ থেকে বেড়ে এখন ঝিনুকের সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার। আনুমানিক বাজারমূল্য ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা।