শত বছরেরও বেশি সময় ধরে শুঁটকি উৎপাদনে জড়িত চরলালপুরের মানুষজন । যা স্থানীয়ভাবে শুঁটকি পল্লী হিসেবে পরিচিত। এখানে উৎপাদিত ৫০ ভাগই পুঁটি মাছের শুঁটকি, যা রপ্তানি হয় ভারতেও।
এ শুঁটকি পল্লীতে কাজের সুযোগ হয়েছে কয়েকশ' নারী-পুরুষের। মাছ সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও শুঁটকি শুকানোর কাজ করে আয় করছেন বাড়তি টাকা। তবে এবার সংকট রয়েছে মাছের। মাছের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে শুঁটকির দাম বাড়ছে কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত।
শ্রমিকরা বলেন, 'আমরা সকাল ৮টায় কাজ শুরু করি আর বিকাল ৪টায় যাই। রোজ ১৭০ টাকা পাই।'
ব্যবসায়ীরা বলেন, 'এবার মাছের আমদানি কম তাই শুঁটকি দিতে পারতেছি না। লাভের অংকটাও কম হবে। প্রতি কেজিতে ১৫০ টাকা করে দাম বাড়বে। আমরা ব্যাংকের কোন সহযোগিতা পাই না। তাই ব্যবসাটা পিছিয়ে আছে।'
ব্যাংক ঋণ না পাওয়ায় বিভিন্ন সমিতি ও এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছেন এখানকার ছোট ব্যবসায়ীরা । যদিও জেলা ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন বলছে, জামানত ছাড়া ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেয়ার সুযোগ রয়েছে শুঁটকি ব্যবসায়ীদের।
ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুল কাইয়ূম খাদেম বলেন, 'জামানত ছাড়া সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা। আর জামানতসহ তাদের চাহিদা অনুযায়ী বড় আকারে আমরা লোন দিতে পারবো।'
জেলা মৎস্য বিভাগ বলছে পর্যাপ্ত পানির অভাবে এবার কমেছে মাছ উৎপাদন। তবে শুঁটকি উৎপাদনে জড়িতদের প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে এ খাতে দক্ষ কর্মী সৃষ্টিতে কাজ করছে তারা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমগীর কবির বলেন, 'নিরাপদ শুঁটকি উৎপাদন করার বিষয়ে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে মাছ শুকানোর জন্য আধুনিক ডিভাইসগুলো শুঁটকি উৎপাদনকারীদের দেয়া হবে।'
চরলালপুর শুঁটকি পল্লীতে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১শ' ব্যবসায়ী আছেন।