দেশে এখন
অর্থনীতি
0

হুমকিতে যশোরের ১৬শ’ কোটি টাকার ফুল বাণিজ্য

বিদেশি নানা জাতের কাঁচা ও প্লাস্টিকের ফুল আমদানিকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।

উৎপাদনের তুলনায় বিক্রি কম হওয়ায় হুমকির মুখে যশোরের ১৬০০ কোটি টাকার ফুলের বাজার।

দেশের ২৫ জেলার প্রায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুল চাষে যুক্ত রয়েছেন প্রায় ২০ হাজার ফুল চাষি। তবে অন্যান্য জেলার তুলনায় সবচেয়ে বেশি ফুল চাষ হয় যশোরে।

জেলার গদখালির পানিসারা গ্রামের বাগানগুলোতে গোলাপ, গাঁদা, জারবেরাসহ চাষ হয় চন্দ্রমল্লিকা। বাগানগুলোতে ফুল পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।

তারা বলেন, প্লাস্টিকের ফুল ব্যবহার করার কারণে আমাদের এই চাষ করা ফুলের চাহিদা অনেক কমে গেছে। যে কারণে আমরা ক্ষতির মুখে পড়েছি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানিকৃত প্লাস্টিক ফুলের কারণে দেশীয় ফুলের চাহিদা কমায় হুমকিতে শত কোটি টাকার ফুলের বাজার। বর্তমানে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ইভেন্টগুলোতে ব্যবহার হচ্ছে নানা জাতের বিদেশি ফুল। তাই দেশীয় ফুলের সহজ বিপণন পদ্ধতি তৈরির পাশাপাশি আমদানি বন্ধে একটি নীতিমালা প্রণয়নের দাবি ফুল ব্যবসায়ীদের।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘আমরা আগের মতো ফুল বিক্রি করতে পারছি না। বিক্রি করতে পারলেও দাম কম পাচ্ছি। মূলত প্লাস্টিকের ফুলের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সাবেক সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, 'ফুল চাষ, আমদানি-রপ্তানি এবং বাজার ব্যবস্থার উপর সঠিক নীতিমালা প্রণোয়ন করা হলে  এমনটা হতো না।'

প্লাস্টিকের ফুল পরিবেশসহ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বলছেন বিশেষজ্ঞরা। একইসঙ্গে দেশীয় ফুলের বাজারকে এগিয়ে নিতে আমদানি বন্ধের প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।

গ্রীনওয়ার্ল্ড এনভাইরনমেন্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শেখ আশিক মাহমুদ সবুজ জানান, 'মাটির অণুজীব বাঁচাতে হলে প্লাস্টিকের ফুলসহ সকল পণ্য বর্জন করতে হবে।'

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক ড. সুশান্ত তরফদার বলেন, 'প্রাকৃতিক ফুলের ব্যবহার বৃদ্ধি ও প্লাস্টিক ফুল বর্জনের বিষয়ে আমরা প্রচারণা চালাচ্ছি।'

যশোরের গদখালির ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয় প্রায় ৩২ হাজার টন ফুল, যার বাজারমূল্য প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।