দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। তবে ঈদের আমেজ নেই দর্জি বাড়িতে। একসময় কাজের চাপে শ্রমিকদের নাজেহাল অবস্থা হলেও খালি পড়ে আছে অধিকাংশ মেশিন।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় গার্মেন্টস শিল্পের দৌরাত্ম্যে সেই দর্জি বাড়িগুলোতে নেই আগের মতো ভিড়। এক সময় নড়াইলের তিনটি উপজেলায় অন্তত ১৫ হাজার দর্জি ও কারিগর থাকলেও এখন ঠেকেছে দুইশ জনে। বেশিরভাগই বদলে ফেলেছেন পেশা। বংশপরম্পরায় কেউ কেউ এই পেশাকে আঁকড়ে ধরে রাখলেও আছে হতাশা।
দর্জিদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এখন গার্মেন্টসগুলো আসার কারণে আমাদের ব্যবসায় কিছুটা প্রভাব পড়েছে।’
আরেকজন বলেন, ‘এখন গার্মেন্টস থেকে সবাই কিনে পড়ে। তাই আমাদের এখানে চাপ কম।’
পেশা পরিবর্তন করা দর্জিদের কথা জানতে চাইলে একজন বলেন, ‘যারা পেশা পরিবর্তন করে চলে গেছে তারা কেউ রাজমিস্ত্রির কাজ করে, কেউবা ক্ষেত-খামারি করে। কারণ এটা দিয়ে তো পেট চলে না।’
এদিকে শবে-ই বরাতের পর থেকেই চাপ বেড়েছে জেলার তিনটি উপজেলার বিপণিবিতানে। ক্রেতারা বলছেন, দর্জি বাড়ির চেয়ে কমদামে আধুনিক মানসম্মত পোশাক কিনতে পারায় শপিংমলে ঝুঁকছেন তারা।
ক্রেতাদের মধ্যে একজন বলেন, ‘দাম তুলনামূলক কম এবং দেখতে সুন্দর হওয়ার কারণে আমরা ব্র্যান্ডের পোশাকই কিনি।’
বিক্রেতারা বলছেন, ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে বাড়ছে বেচাকেনা। সামনে আরও বেশি বিক্রি বাড়ার প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।
বিক্রেতাদের মধ্যে একজন বলেন, ‘১৫ রমজানের পর থেকে কাস্টমারদের আনাগোনা অনেক বেড়ে গিয়েছে। আশা করছি আরো বাড়বে।’
দর্জি কারিগরদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন সহযোগিতার আশ্বাস দেন বিসিক কর্মকর্তারা।
নড়াইল বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক ইঞ্জিনিয়ার মো. সোলাইমান হোসেন বলেন, ‘তাদেরকে আমরা প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি, আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে থাকি, মার্কেটিং করে থাকি যেন তাদের এই শিল্প আরো এগিয়ে যায়।’
এমন পরিস্থিতিতে দর্জি পেশাকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলে দাবি করেন সংশ্লিষ্টরা।