স্হানীয়রা বলছেন- সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে ইকো ভ্যালী নামক একটি রিসোর্ট থেকে দুপুর একটার দিকে আগুনের ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে। মুহুর্তেই তা ছড়িয় পড়ে। অনেকের ধারনা করছেন রান্না ঘরের সিলিন্ডার, অথবা বিদ্যুতিক শর্ট সার্কি থেকে আগুন লেগেছে। আবার অনেকে ধারনা করছেন সিগারেটের আগুন থেকে। তবে প্রশাসনের ধারনা বিদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
আগুন লাগার সাথে সাথে স্থাণীয় লোকজন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। তবে তারা সম্পূর্ন ব্যর্থ হন। বাঘাইছড়ি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস না থাকায় খাগড়াছড়ি সদর, পানছড়ি, দীঘিনালাসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে ১১টি ইউনিট খবর পেয়ে রওনা দিলেও সাজেকে পৌছতে প্রায় আড়াই ঘন্টার সময় লাগে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের। এরপর তারা আগুন নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা চালালেও আগুনের লেলিহান তীব্রতা হওয়ায় তাদের বেগ পেতে হয়। পরে বিকাল ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় হতাহত হয়নি। আগুন লাগার ঘটনায় সাজেকে অবস্থান করা পর্যটকদের মাঝে আতংক দেখা দেয়। পরে সাজেকে থাকা পর্যটকদের নিরাপদ প্রহরায় খাগড়াছড়িতে পৌছে দেওয়া হয়েছে।
সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুবর্ণ দেববর্মন জানান, ভয়াবহ আগুনে ৩২টি রিসোর্ট, ৩৫টি বসত ঘর( ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ১৯টি ও লুসাই ১৬টি), ২০টি দোকানঘর ও ৭টি রেষ্টুরেণ্ট পুড়ে গেছে। এসব পুড়ে যাওয়া রিসোর্ট, বসত ঘর, দোকানপাত ও রেষ্টুরেণ্ট এর মালামালের কিছুই রক্ষা করতে পারেনি। ধারনা করা সিগারেটের আগুন থেকে এ আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
তবে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ইমতিয়াশ ইয়াসিন এক প্রেস বার্তায় জানিয়েছেন সাজেক পর্যটন এলাকায় শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে সাজেক অবকাশ ম্যানুয়েল রিসোর্টসহ পার্শ্ববর্তী রিসোর্টে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে। এতে পর্যটন কেন্দ্রের একপাশে পুড়ে যায়। শেষ খবর পাওয়া পর্ষন্ত ১২০ থেকে ১৪০ টির বেশি রিসোর্ট, ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি আগুনে পুড়ে গেছে।
খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ পরিচালক মোহাম্মদ জাকের হোসেন জানান, বিকাল ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও আগুন যাতে অন্যত্র সরাতে না পারে সেজন্য পানি ছিটানো হচ্ছে। তবে সাজেক পর্যটনটি পাহাড়ের উপর হওয়াতে পানি নিয়ে সংকট পড়তে হয়েছে। কোথায় থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, পর্যটক গমনের উপর সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্ত সহায়তা করা হবে।