রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত হওয়ার ২৭দিন আগে ফেসবুকে পোস্ট করা শেষ ভিডিওতে মৃত্যু নিয়ে কথা বলেছিলেন ইয়াসিন।
ভিডিওতে ইয়াসিন বলেন, ‘একমাত্র আল্লাহ তাআলাকে ভয় পাই। কারণ জন্ম-মৃত্যু সব উনি লিখেছেন। যদি আমার এখানে মৃত্যু হয় হয়তো তার আদেশে মৃত্যু হবে।’
তিনি বলেন, ‘যে স্বপ্ন আমার বাংলাদেশে পূরণ হয় নাই, সে স্বপ্ন দূর প্রবাসে এসে পূরণ হয়েছে।’ রাশিয়া যাওয়া, সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়া এবং তার স্বপ্ন পূরণ নিয়েও কথা বলেন।
একটি কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাশিয়া যান ইয়াসিন। মস্কো থেকে প্রায় ১১ হাজার কিলোমিটার দূরের ওই কোম্পানিতে তিন মাস কাজ করার পর ২২ ডিসেম্বর রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক সৈনিক হিসেবে যোগ দেন।
দেশে না হলেও বিদেশে সৈনিক হয়ে বাবার স্বপ্ন পূরণ করলেও মিসাইলের আঘাতে সব শেষ হয়ে যায়। ২৭ মার্চ ইয়াসিন নিহত হলেও পরিবার জানতে পারে ঈদের পরদিন। উপার্জনক্ষম ছেলের এমন মৃত্যুতে পাগল প্রায় বৃদ্ধা মা। ছেলের ছবি বুকে নিয়ে তার আহাজারিতে ভারি পরিবেশ।
ইয়াসিনের এক সহযোদ্ধা ফোনকলে বলেন, ‘ইয়াসিনের উপর বোমা পড়েছিল। বোমা পড়ার পর সে একবাবে তছনছ হয়ে গিয়েছিল।’
ধারদেনা করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়ে সেই দেনার চাপে এখন দিশেহারা পরিবার। রাশিয়া সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ে পদক্ষেপ নিতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন স্থানীয়রা।
এদিকে, নিহত ইয়াসিনের পরিবারকে সবধরনের সহায়তা দেয়ার কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুনন্দা সরকার প্রমা বলেন, ‘বিধি মোতাবেক সকল কিছুই যেন সরকারিভাবে আমরা চেষ্টা করবো সকলভাবে সহযোগিতা করার জন্য।’
গৌরীপুরের মরিচালি গ্রামের মৃত সাত্তার শেখের ছোট ছেলে ইয়াসিন শেখ।