আজ (শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর) সকালে প্রিয় কবি বন্ধুকে স্মরণে কৈশোর জীবন পার করা প্রথম স্কুল দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে যান তারা।
সেখানে স্মৃতিচারণ করেন কবির বন্ধু বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী, সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল, হিমু পাঠক আড্ডার তরুণরা। কবি হেলাল হাফিজ ছিলেন নির্মুহ একজন নিভৃতচারী মানুষ। যিনি স্বেচ্ছায় একাকিত্ব জীবন বেছে নিয়েছেন।
১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোণার শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় তাঁর জন্ম। হেলাল হাফিজের পৈত্রিক ভিটা আটপাড়া উপজেলার বড়তলী গ্রামে। দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট ছিলেন তিনি। তিন বছর বয়সে মাতৃহারা হওয়ায় মায়ের অভাব পূরণ করতে বাবা খোরশেদ আলী তালুকদার দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
পরে আরও দু’ভাই দু’বোনের জন্ম হয়। এদিকে বড় হতে থাকেন কবি আর মাতৃবিয়োগের বেদনা আঁকড়ে ধরে। পিতা খোরশেদ আলী তালুকদার দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের জনপ্রিয় শিক্ষক ছিলেন। সবাই ডাকতো পাগরীওয়ালা স্যার। সেই সুবাদে পিতার বিদ্যালয়ের ছাত্র হন তিনি।
১৯৬৫ সনে মেট্রিক পাসের মধ্য দিয়ে স্কুলের পাঠ চুকিয়ে সরকারি কলেজে ভর্তি হন। প্রতিবেশি সবিতা সেনের কাছে পড়তেন ছোটবেলায়। তখন থেকে মায়ের আদরে শিশুকাল থেকে কৈশোরে পা রাখেন। পরে ১৯৬৭ সনে কলেজ শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়ে নেত্রকোণার পাঠ চুকিয়ে দেন। মাতৃবিয়োগের যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে কবিতার আশ্রয় নেন। যৌবনের ইতি টানেন নেত্রকোণা থেকে।
এরপর সব মিলিয়ে মাত্র তিনবার এসেছিলেন নেত্রকোণায়। হেলাল হাফিজের বড় ভাই দুলাল হাফিজ ঢাকায় থাকলেও তিনি প্রেসক্লাবকে প্রথম ঘর সংসার ভাবতেন। দ্বিতীয় ঘর ছিল সেগুনবাগিচার একটি হোটেল।
কিন্তু নেত্রকোণার ভক্তবৃন্দ এবং বন্ধুরা হিমু পাঠক আড্ডার আয়োজনে কবির অনুপস্থিতেই ২০১৯ সনে হেলাল হাফিজকে সম্মাননা প্রদানের পর নেত্রকোণায় আসার প্রস্তুতি নেন। কবির স্মৃতি ধরে রাখতে কবির বিদ্যাপীঠ দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের গাছতলায় হেলাল হাফিজ চত্বর ঘোষণার দাবি জানায় সংগঠনটি।
কিন্তু করোনার মহামারি চলে আসায় কবিকে ভাই দুলাল হাফিজের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর এক বছর পর আবারও হোটেল জীবনে ফিরে এলে শাহবাগে সুপার হোম হোটেলেই শেষ অবধি ছিলেন।