আজ (রোববার, ২১ ডিসেম্বর) রাতে সিআইডি থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে সই করেন সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আবু তালেব।
সিআইডি জানায়, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে এসব অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এসব লেনদেন মানিলন্ডারিং, সংঘবদ্ধ অপরাধ এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অর্থায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
সিআইডি সূত্রে জানা যায়, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ওসমান হাদি মাথায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই ঘটনাটির বিভিন্ন দিক নিয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করা হয়। দ্রুত ঘটনাস্থলে ক্রাইম সিন ইউনিট পাঠানো, সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ, ব্যবহৃত গুলির খোসা উদ্ধার এবং বিভিন্ন আলামত ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে তদন্ত কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া ব্যাংক হিসাব–সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে মানিলন্ডারিং অনুসন্ধান শুরু করা হয়। গ্রেপ্তার অভিযানের সময় উদ্ধার হওয়া বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবইয়ের তথ্য গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করে দেখা যায়, অভিযুক্ত ও তার স্বার্থ–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের একাধিক চেকবইয়ে বিভিন্ন অঙ্কের অর্থের উল্লেখ রয়েছে। যদিও এসব লেনদেন চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন হয়নি, তবে এসব রেকর্ডের সমষ্টিগত মূল্য প্রায় ২১৮ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:
সিআইডির প্রাথমিক বিশ্লেষণে আরও উঠে আসে, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবগুলোতে বাস্তবে সংঘটিত লেনদেনের পরিমাণ ১২৭ কোটি টাকার বেশি, যা অস্বাভাবিক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আমলে নিয়ে মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত পৃথক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
এছাড়া মূল অভিযুক্ত ও তার স্বার্থ–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা প্রায় ৬৫ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার জন্য দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে সিআইডি। একই সঙ্গে এসব অর্থের প্রকৃত উৎস ও অর্থ সরবরাহকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করতে অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
সিআইডি আরও জানায়, হত্যাকাণ্ডের পেছনে পরিকল্পনা, অর্থায়ন ও অস্ত্র সরবরাহে কোনো সংঘবদ্ধ ও শক্তিশালী নেটওয়ার্ক সক্রিয় ছিল কি না, সে বিষয়েও একাধিক তদন্ত দল কাজ করছে।
ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে রাহুল এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। তবে, মামলার আলামত গোপন এবং তাকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে তার পরিবারের সদস্যসহ একাধিক সহযোগীকে এরইমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
মূল হোতাকে গ্রেপ্তার এবং পুরো অপরাধচক্র উন্মোচনে অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।





