চট্টগ্রাম বাকলিয়া এক্সেস রোডে সোমবার রাত ১২টার দিকে মুহুর্মুহু গুলির শব্দ। থেমে থেমে কেঁপে উঠছে আশপাশ। এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে চাপা আতঙ্ক। স্থানীয় একজনের ধারণ করা ভিডিওতে ধরা পড়ে সেই ভীতিকর মুহূর্ত।
গোলাগুলির ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন যুবদল কর্মী মো. সাজ্জাদসহ আরও অন্তত ১১ জন। হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান সাজ্জাদ। স্বজনদের অভিযোগ স্থানীয় বোরহান উদ্দিন ও সোহেল গ্রুপের অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন হেলমেট পড়ে এ হামলা চালায়। যারা আগে থেকে ওঁৎপেতে অবস্থান নিয়েছিলো আশপাশের কয়েকটি ভবনে। এসময় পুরো এলাকায় ছিল না বিদ্যুৎ।
স্থানীয়রা জানান, এলাকায় আধিপত্য নিয়ে সোহেল ও বোরহান গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছিল। গতরাত ১টার দিকে একপক্ষ ব্যানার লাগাতে গেলে, আরেক পক্ষ তা নামিয়ে ফেলার চেষ্টা করে। এসময় দুই পক্ষের গোলাগুলিতে নিহত হন সাজ্জাদ।
স্বজনেরা জানান, নিহত সাজ্জাদ নগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশার অনুসারী। এলাকায় মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের ব্যানার লাগানো ঘিরে বাকবিতণ্ডায় হত্যাকারীদের টার্গেট হন সাজ্জাদ।
তার বাবার অভিযোগ, হামলাকারীরা আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত থাকলেও এখন বিএনপিতে সক্রিয়।
সকালে নিহতের মরদেহ দেখতে চমেক হাসপাতালে আসেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তার অভিযোগ, হামলাকারীরা ওই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রুপ। যারা আগে আওয়ামী ছত্রছায়ায় থাকলেও এখন তার ছবি ব্যবহার করে নগরের বিভিন্ন স্থানে ব্যানার-পোস্টার লাগিয়ে প্রভাব বিস্তারের পাঁয়তারা করছে।
মেয়র ডা. শাহাদাত দাবি করেন, তাদের এসব ব্যানার পোস্টার তুলে ফেলার নির্দেশের পাশাপাশি তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কমিশনারকে অনুরোধ করেছিলেন তিনি। তবে এক্ষেত্রে থানার গাফিলতি রয়েছে বলেও অভিযোগ তার।
এ ঘটনায় আহত আরও ১১ জন গুলির আঘাতে হালকা আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। একজন ছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে রাতেই ঘরে ফিরেন ১০ জন। আহতদের দাবি, ফুটবল খেলতে যাওয়ার সময় তাদেরকে লক্ষ্য করে অতর্কিত গুলি ছোড়া হয়।
এ সংঘর্ষের ঘটনায় বাকলিয়া এক্সেস রোড এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, ‘ব্যানার টাঙানো নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সূত্রপাতের কথা শোনা যাচ্ছে। সংঘর্ষে এক জন মারা গেছে বলে আমরা খবর পেয়েছি।’
এর আগে, গত মার্চে বাকলিয়া এক্সেস রোডে প্রাইভেটকারে সন্ত্রাসী সাজ্জাদ বাহিনীর ব্রাশফায়ারে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে।




