আদালতে মেজাজ হারালেন শাজাহান খানসহ আ.লীগের নেতারা

আদালত প্রাঙ্গনে পুলিশি নিরাপত্তায় শাহজাহানসহ আ.লীগের অন্য নেতারা
আদালত প্রাঙ্গনে পুলিশি নিরাপত্তায় শাহজাহানসহ আ.লীগের অন্য নেতারা | ছবি: এখন টিভি
0

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য পেশকালে আদালতে মেজাজ হারালেন আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা। জুলাই-আগস্টের মামলায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হচ্ছে বলে দাবি করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, অন্তবর্তী সরকারের নির্দেশ, কাউকে অবিচার আর নির্যাতন করা হবে, সঠিক বিচার পাবে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।

এদিকে জুলাই আগষ্টে ছাত্র-জনতাকে হত্যা মামলায় ফের বিভিন্ন মেয়াদের রিমান্ড দেয়া হয়েছে সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক মেয়ে আনিসুল হক ও জুনাইদ আহমেদ পলককে।

আজ (বুধবার, ২৩ এপ্রিল) সকালে হাস্যজ্জল মুখে আদালতের এজলাসে ওঠেন হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলক, শাজাহান খানসহ আওয়ামী লীগের এক সময়ের প্রভাবশালী নেতারা। শুরুতে আদালত প্রাঙ্গণে তাদের বেশ ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেলেও পরে সেই চিত্র পাল্টে যায়।

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্মম বিবরণ ও ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের নানা অত্যাচার-নিপীড়নের বর্ণনা আদালতে তুলে ধরেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। এ সময় মেজাজ হারান শাজাহান খান, আতিকুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিচারককে বলেন, ‘শাজাহান খান মন্ত্রী থাকা অবস্থায় নৌপরিবহন সেক্টর, সন্ত্রাসী কায়দায় জিম্মি করে রেখেছিলেন।’ এ কথা শুনে রেগে যান শাহজাহান খান। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও এজলাসে উপস্থিত আইনজীবীদের সঙ্গে তার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।

শাজাহান খান বলেন, ‘আমাকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতে বিচারকের সামনে থ্রেট করেছে। আমার বুকে ৫টি ব্লক, নাক বন্ধ, প্রেশার আছে, বন্দী অবস্থায় আমি দুইবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। পিপি যা বলছে তা অদ্ভুত অভিযোগ।’

ছাত্র-জনতা হত্যার ৯ মাস পরে এসে সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামের আইনজীবী আদালতকে বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আতিকুল ইসলাম বিরোধী ছিলেন না, বরং পক্ষে ছিলেন।’ যদিও শুনানি শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি তার আইনজীবী।

এদিনে জুলাই আগস্টের বিচারকার্যে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন আসামিপক্ষের এক আইনজীবী।

শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশ, আওয়ামী লীগের মতো বিচারের পূর্বে কারো সঙ্গে অবিচার আর রিমান্ডের নামে নির্যাতন করা হবে না। তারপরও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আদালতে মিথ্যাচার ও বেফাঁস কথা বলে আদালতকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছেন।’

আরো পড়ুন:

এদিন যাত্রাবাড়ী, ভাটারা ও বাড্ডা থানার বেশ কয়েকটি হত্যা মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দেয়া হয় শাজাহান খান, আতিকুল ইসলাম, জুনাইদ আহমেদ পলক ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তানভীর হাসান সৈকতকে।

এর মধ্যে যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় আতিকুল ইসলাম ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তানভীর হাসান সৈকতকে ২ দিন ও শাজাহান খানকে ১ দিন, ভাটারা থানার মনির হোসেন হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামের ২ দিন, বাড্ডা থানায় মামলা সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের ২ দিন এবং যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় সাবেক ওসি আবুল হাসানকে ৩ দিনের রিমান্ড দেয়া হয়েছে।

আদালত প্রাঙ্গণে হাসান সৈকত বলেন, ‘ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে গর্বিত আমি। আমার দায়িত্বের সময় একটিও হত্যাকাণ্ড হয়নি।’

এছাড়া বিভিন্ন থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলাম, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজসহ ৮ থেকে ১০ জন সাবেক মন্ত্রী এমপিকে।

এএইচ