আজ (শুক্রবার, ৪ এপ্রিল) বিকেলে আমেনা বেগমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিকে আবিদাকে গুলি করে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় অহিদসহ তিনজনের নামে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা করেছে তার বাবা ইব্রাহিম খলিল। মামলায় অভিযুক্ত ফাতেমা বেগম আঙ্কুরীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল (বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মামলার দায়েরের পর তাকে চন্দ্রগঞ্জ থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আঙ্কুরী মামলার প্রধান অভিযুক্ত অহিদের স্ত্রী। অপর আসামি অহিদের ছেলে মো. ফাহিম। ঘটনার পর থেকে অহিদ ও ফাহিম পলাতক রয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের কাশীপুর গ্রামের কাচারি বাড়ি এলাকায় বাড়িতে শিশু আবিদা গুলিবিদ্ধ হয়।
ঘটনার সময় আবিদা প্রধান অভিযুক্ত অহিদের মেয়ে জেরিনের সঙ্গে খেলছিল। আবিদার মা আমেনা তাকে ঘরে আসার জন্য ডাকছিল। তখন অভিযুক্ত ফাতেমা ও ফাহিমের প্ররোচনায় আবিদাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পিস্তল নিয়ে অহিদ গুলি করে।
গুলিটি আবিদার পিঠের ডান পাশে বিদ্ধ হয়ে পেটের ডান পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। তাৎক্ষণিক আবিদা অচেতন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অহিদ একজন অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। মামলার বাদী ইব্রাহিম প্রবাসে থাকাকালীন অহিদ বিভিন্নভাবে তার কাছ থেকে টাকা নিতো।
একবছর আগে বাদী প্রবাস থেকে চলে আসে। এতে অহিদকে টাকা পয়সা দিচ্ছে না। এজন্য তাদের মধ্যে মনমালিন্য সৃষ্টি হয়।
ঘটনার পর হাসপাতালে আনার পথে ধারণকৃত একটি ভিডিওতে শিশু আবিদাকে বলতে শোনা যায়, অহিদ তাকে গুলি করেছে। তবে কি কারণে, কিভাবে গুলি করছে সে কথা বলতে পারেনি। তার দুচোখের পাতা বন্ধ হয়ে যায়।
আমেনা বেগম বলেন, ‘ঘটনার দিন আছরের নামাজের পর অহিদের ছেলে ফাহিমের সঙ্গে একটি মোটরসাইকেলে করে তিনজন লোক আসে। মাগরিবের সময় ৩টি মোটরসাইকেল নিয়ে আরও কয়েকজন লোক আসে। তখন ওযু করতে গেলে দেখি তারা অহিদের বাড়িতে ঢুকছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘লোকগুলোকে দেখে আমার কলিজায় কামড় দিয়েছে, ভয়ও পেয়েছি। তাদের দেখলেই ভয় লাগে। আবিদা তখন অহিদের মেয়ে জেরিনের সঙ্গে খেলছিল। লোকজনের কারণে আমি তাকে আনতে যেতে পারিনি। পাশে একটি ঘরে ঢুকে জানালা দিয়ে ডাকছিলাম। তখন ঘরের দরজার পেছনে অহিদ যেন কি করছিল।
তিনি বলেন, ‘হঠাৎ সেখান থেকে বের হয়ে ঘরের সামনের একটি আমগাছের নিচে যায়। সেখানে আবিদা ও জেরিন ঘুরে ঘুরে খেলছিল। এরমধ্যেই অহিদ আমার মেয়ের পিঠ গুলি করে। আমি দৌড়ে গিয়ে মেয়েকে কোলে নিয়ে তাকে বলেছি তুই আমার মেয়েকে শেষ করে দিয়েছিস। এসবের পর সে মানিব্যাগ বের করে টাকা দিচ্ছিল চিকিৎসার জন্য। আমি সব ফেলে দিয়ে মেয়েকে বাঁচানোর জন্য হাসপাতাল চলে যায়।’
চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘শিশুকে গুলি করে হত্যা চেষ্টা মামলায় তিনজনের নামে মামলা হয়েছে। এরমধ্যে একজন গ্রেপ্তার রয়েছে।
তাকে লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।