অপরাধ ও আদালত
0

কাউকে যেন এক টাকাও চাঁদা না দেয়া হয়: উপদেষ্টা আসিফ

চাঁদার টাকা না পেয়ে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে দুই ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় দুই হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ (রোববার, ১২ জানুয়ারি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ব্যবসায়ীদের জানান, কাউকে যেন এক টাকাও চাঁদা না দেয়া হয়। নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও তা সন্তোষজনক নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে মাল্টিপ্লান সেন্টারের সামনের সড়কে গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১১টায় শপিংমলের দুই ব্যবসায়ী নেতা মো. এহতেসামুল হক ও মো. ওয়াহিদুল হাসান দীপু কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন।

হঠাৎ হামলা হয় তাদের ওপর। কিছু বুঝে ওঠার আগেই চাপাতি-রামদা দিয়ে কোপাতে শুরু করে দুর্বৃত্তরা। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, এ সময় নয় থেকে ১০ জন যুবক এহতেশামুল হককে রাস্তায় ফেলে চাপাতি দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। হামলাকারীরা প্রাইভেটকারে থাকা ওয়াহিদুল হাসানকেও কোপায় এবং তার গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে তিনি পালিয়ে প্রাণ বাঁচান। হামলার মুখে পালাতে পারেনি এহতেশামুল হক। সাত থেকে আট জন ঘিরে রাখে তাকে। হামলায় এহতেশামের দুই হাত ও পা গুরুতর জখম হয়েছে।

এরপরই প্রতিবাদী হয়ে ওঠে ব্যবসায়ীরা। সামনে আসে চাঁদাবাজির বিষয়। এই ঘটনার বিচারের দাবিতে অবস্থান ধর্মঘটও করে তারা।

একজন ব্যবসায়ী বলেন, 'সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের কাছে আমরা জিম্মি থাকবো? না। আমরা চাই বাসা থেকে বের হয়ে যেভাবে সুস্থ শরীরে এখানে আসবো, সেভাবেই সুস্থ শরীরে বাসায় ফিরে যাবো।'

অন্য একজন ব্যবসায়ী বলেন, 'সবাই আজকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। কারণ টোটাল এলিফ্যান্ট রোডের এ ধরনের চাঁদাবাজি বা এ ধরনের হত্যাচেষ্টা বা এ ধরনের ঘটনা এর আগে কখনও ঘটেনি। আইনশৃঙ্খলার এত অবনতি কোনোদিন ঘটেনি।'

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন চাঁদাবাজির কারণে অতিষ্ঠ তারা। এরপরই এই ঘটনা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা। চাঁদা না দিতে ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেন তিনি।

আসিফ মাহমুদ বলেন, 'রাজনৈতিক দল ছাড়াও বিভিন্ন মাফিয়া গ্রুপ, স্থানীয় বিভিন্ন চাঁদাবাজ গ্রুপের ইনভলবমেন্ট আছে। এখানে যে ঘটনাটা ঘটেছে সেটার বিষয়ে আমাদের আজকে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মিটিং ছিল সেখানেও কথা হয়েছে। এই ঘটনাটাকে ধরেই শাস্তি এবং যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার মাধ্যমে একটা নজির যেন স্থাপন হয় যেন আর কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর শাহস না করে।'

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিউ মার্কেট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার তারিফ লতিফ বলেন, 'দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছি। এর মধ্যে এজহারভুক্ত আসামি। এখন সবকিছুই তো তদন্তের বিষয়, আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবো। এর সাথে আশেপাশে যত সিসি ক্যামেরা আছে আমরা সেগুলো সংগ্রহ করেছি। সেগুলোর একটা বিশ্লেষণ করে, জিজ্ঞাসাবাদে যে তথ্য পাবো তার প্রেক্ষিতে জানিয়ে দিবো।'

ঘটনার সাথে জড়িত সবাইকে দ্রুত শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে পুলিশের পাশাপাশি মাঠে আছে গোয়েন্দা সংস্থা।

এসএস