বাংলাদেশের দক্ষিণে নদীর বুকে জেগে উঠা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া। যেখান সাড়ে ৭ লাখ মানুষের বাস। এ দ্বীপে স্থানীয়দের স্বাস্থ্যসেবার জন্য আছে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। তবে চিকিৎসক সংকটের কারণে প্রতিমাসে শতাধিক অন্তঃসত্ত্বা নারী, শিশুসহ জটিল রোগে আক্রান্তদের উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয় নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে।
উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় উত্তাল মেঘনায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট কাঠের নৌকা বা মাছ ধরার ট্রলারেই পার হতে হয় তাদের। যাতে প্রায়ই ঘটে প্রাণহানি।
স্থানীয়রা জানান, কাঠের নৌকা বা মাছ ধরার ট্রলারে রোগীদের নিয়ে যেতে হয়। নদীর মাঝ পথে কেউ মারা যায়। কেউ নৌকায় ওঠার সময় মারা যায়। কেউ আবার নদীর ঢেউয়ে স্টোক করে পথেই মারা যান। রাতে তাদের যাতায়াত করতে অনেক কষ্ট হয়ে যায়। রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
আরও পড়ুন:
ভোগান্তি লাঘবে ২০১৯ সালে স্বাস্থ্যবিভাগ থেকে ও ২০২২ সালে জাইকার মাধ্যমে রোগীদের নদী পারাপারের জন্য দেয়া হয় দুটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স। শুরুতে ভালো সেবা দিলেও বর্তমানে চালক না থাকা, জ্বালানি সংকট ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বরাদ্দ না থাকায় নষ্ট হয়ে পড়ে আছে নৌ অ্যাম্বুলেন্স দুটি। যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে মরিচা ধরেছে কোটি টাকা মূল্যের নৌ অ্যাম্বুলেন্সে। যা বর্তমানে কোনো কাজে আসছে না সেবা প্রত্যাশীদের।
সেবা প্রত্যাশীরা জানান, দুটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স পড়ে আছে। তারা কোনো সেবাই পাচ্ছে না এ নৌ অ্যাম্বুলেন্স থেকে। যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করে এলাকাবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলছেন, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিয়োগ পেলে নৌ অ্যাম্বুলেন্সগুলো সচলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নোয়াখালী হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মানসী রানী সরকার বলেন, ‘আমাদের নৌ অ্যাম্বুলেন্সে কিছু সমস্যা আছে। পাখা নষ্ট হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকার কারণে এ সমস্যাগুলো হয়েছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়েছি। বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছেন।’
উপকূলীয় দ্বীপ উপজেলাটির সাড়ে সাত লাখ মানুষের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে নৌ এম্বুলেন্স দুটি প্রয়োজনীয় সংস্কার করে চলাচলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি স্থানীয়দের।





