রাত শেষে দিনেও আতঙ্কের জনপদ হয়ে উঠেছে নরসিংদী, বাড়ছে ছিনতাই

সন্ধ্যা ও রাতে নরসিংদীর দৃশ্য
সন্ধ্যা ও রাতে নরসিংদীর দৃশ্য | ছবি: এখন টিভি
0

সুখবর আর উন্নয়নের মাঝে মাঝে সমাজের কিছু কালো ছায়া উঁকি দেয়। ঠিক তেমনই এক গভীর উদ্বেগের খবর আসছে নরসিংদী থেকে। দিনের আলো নিভে গেলেই এ জনপদ পরিণত হয় এক অনিরাপদ রাজ্যে। রাতের পাশাপাশি এই আতঙ্ক কখনো ভর করছে দিনের আলোতেও। কেন এই আতঙ্ক? আর শহরের কোন কোন এলাকা পরিণত হয়েছে আতঙ্কের জনপদে?

দিন থেকে রাতের নরসিংদী পুরোটাই আলাদা। রাত বাড়লে ল্যাম্পপোস্টের নিয়ন আলোয় যতটা সৌন্দর্যমণ্ডিত হয় এ শহর, ঠিক ততটাই ভয় আর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে জনপদে। এখন টেলিভিশনের অনুসন্ধান বলছে, শহরের অন্তত ১২টি পয়েন্টে প্রায়শই ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনা।

সারাদিনের ব্যস্ত নরসিংদী সন্ধ্যার পরেই ফাঁকা হতে শুরু করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সবকিছুর ঝাঁপি লেগে যায় আগেভাগে। রাতের নরসিংদীর নীরব কোনো সড়ক ধরে হাঁটলে যে কেউ হতে পারে টার্গেট।

নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন, সরকারি কলেজ সংলগ্ন পৌর পার্ক, সঙ্গীতা ও বাজির মোড়ের অলিগলি, বীরপুর, কান্দাপাড়া, আরশিনগর রেল ক্রসিং, আরশিনগর ওভার পাস, বড়বাজার, হাড়িধোয়া নদীর বেড়িবাঁধ ও সাটিরপাড়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ছিনতাইকারীর কবলে পড়ছে মানুষ। এছাড়া, নতুন বাসস্ট্যান্ড টু মাধবদী ৫ নম্বর সড়কে প্রায়ই ঘটছে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা।

এক ভুক্তভোগী জানান, গত পরশুদিন আমি বারোদি থেকে ফেরার সময় সন্ধ্যার পর ৮ টার আশপাশ এ সময় ৫ নম্বর রুটে ২-৪ জন উঠে এসেছে। তারা বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। তো আমার ড্রাইভার বুঝতে পেরে ওখান থেকে পাশ কাটিয়ে চলে এসেছে। এগুলো আসলে অপ্রত্যাশিত ঘটনা।

রাতের পাশাপাশি দিনের বেলাতেও নীরব ও নিরিবিলি স্থানে এরকম ঘটনা ঘটছে। ছোট ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে অটোচালক অনেকেই ছিনতাইয়ের ভুক্তভোগী। অটো ছিনতাই করে চালককে হত্যা করে সেই অটো নিয়ে পালানোর ঘটনাও রয়েছে নরসিংদীতে।

শহরের বাইরে উপজেলা শহরগুলোতেও এরকম ঘটনা অহরহ। জেলায়, গত এক বছরে ছিনতাইয়ের ঘটনার কোনো হিসাব নেই। পরবর্তীতে আবার সমস্যায় পড়বেন এই ভেবে ভুক্তভোগীরাও প্রাণ খুলে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি নয়। এমনকি, ভুক্তভোগী হয়েও মামলা করতে আতঙ্কে থাকেন।

ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনায় মাদকের সংশ্লিষ্টতা থাকায় দ্রুত এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস জেলা পুলিশের।

নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলম বলেন, ‘অপরাধের মূল জায়গা কিন্তু মাদক। এ মাদক যারা সেবন করে সেটার টাকা সংগ্রহ করতে গিয়ে তারা কিন্তু চুরি, ছিনতাইয়ের আশ্রয় নেয়। যখন কেউ বাধা দেয় তখন খুনের ঘটনা ঘটে। আমরা যদি এ মাদক নির্মূল করতে পারি এবং যারা চুরি ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত তাদের ধরতে পারি তাহলে সমস্যা কমে যাবে। আমরা জায়গাগুলো শনাক্ত করেছি এবং আমাদের অভিযান চলমান আছে।’

এএইচ