এখন টেলিভিশনে সংবাদ প্রচারের পর শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুদকের অভিযান

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুদকের অভিযান
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুদকের অভিযান | ছবি: এখন টিভি
0

সরকারি হাসপাতাল থেকে বিভিন্ন প্যাথলজি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রেফার করার নামে গড়ে উঠেছে অবৈধ কমিশন সিন্ডিকেট। এমন অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ (মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর) দুপুরে এ অভিযান চালানো হয়।

গত ৯ অক্টোবর এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার করে ‘এখন টেলিভিশন’। সে খবর নজরে আসায় এ অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক।

এসময় দালালির অভিযোগে আল মামুন বাদশা (২৫), রেজাউল ইসলাম গাজী (৪২), সাগর হোসেন রনি (২০), মিলন কুমার ঘোষ (১৮), অচিন্ত কুমার বৈদ্য (৪৪), প্রসেনজিৎ কুমার মন্ডল (৩১) ও মর্জিনা (৬০) নামে সাতজনকে আটক করা হয়।

এর মধ্যে আল মামুন বাদশা, রেজাউল ইসলাম গাজী, সাগর হোসেন রনি ও মিলন কুমার ঘোষকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। বাকি তিনজনকে জরিমানা করা হয়েছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন শ্যামনগরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদ হোসাইন।

দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্রে জানা যায়, দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. জাহিদ ফজলের নেতৃত্বে দুদকের একটি দল নানা অনিয়মের অভিযোগে হাসপাতালটিতে হঠাৎ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

অভিযানে দুদকের সদস্যরা হাসপাতালের আউটডোর ও জরুরি বিভাগসহ কয়েকটি প্যাথলজি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন, রোগীর টেস্ট রেফার তালিকা ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রসিদ যাচাই করেন। এসময় দেখা যায়, অনেক ক্ষেত্রে হাসপাতালের নিজস্ব পরীক্ষাগার থাকা সত্ত্বেও বাইরে পরীক্ষা করতে বলা হচ্ছে নির্দিষ্ট কিছু বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।

আরও পড়ুন:

দুদক কর্মকর্তারা জানান, হাসপাতালের কিছু চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্মী রোগীদের নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে কমিশন নিচ্ছেন এমন প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। সংশ্লিষ্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের কাছ থেকেও কমিশনের রেকর্ড উদ্ধার করা হয়েছে।

অভিযানের সময় দুদক বেশ কিছু নথি জব্দ করে এবং সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চায়। এছাড়াও প্রাথমিক তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. জাহিদ ফজল।

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে সাতজন দালালকে আটক করে চারজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। বাকি তিনজনকে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও এ বিষয়ে রিপোর্ট তৈরি করে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সেখানের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের অনৈতিক রেফার প্রক্রিয়া চললেও কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পেত না। দুদকের অভিযান শুরু হওয়ায় তারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন এবং নিয়মিত নজরদারির দাবি জানিয়েছেন।

এসএস