ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে আঠারবাড়ি পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সড়কের কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের মার্চে। সে বছর ৩০ জুনের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার কথা ছিল। ১১৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার রাস্তাটির কাজ প্রায় শেষ হলেও ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকায় আড়াই কিলোমিটার অংশ আটকে আছে। অধিগ্রহণের টাকা না পাওয়ায় বন্ধ রয়েছে সড়কের নির্মাণ কাজ।
পৌর এলাকায় সড়কের দুই পাশে বাসা-দোকানপাটের মালিকদের কেউ অধিগ্রহণের টাকা ছাড়া জমি ছাড়ছেন না। এরমধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। সড়কের কাজ বন্ধ থাকায় ঈশ্বরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী নিয়ে যাতায়াতেও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিপাকে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।
এদিকে অধিগ্রহণ জটিলতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করতে না পেরে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করে। কিন্তু সড়ক বিভাগ আবেদন প্রত্যাখ্যান করে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিয়েই কাজ করানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
ফলে সাড়ে পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি সড়কের কাজ। এদিকে পৌর এলাকা ছাড়াও উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের কিছু অংশেও কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
আরও পড়ুন:
মানববন্ধনে উপস্থিত ভুক্তভোগীরা জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দিয়ে বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। শুধু তা-ই নয়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসার এক মাত্র সড়কই এটি। আর এই সড়কটিও দীর্ঘদিন যাবৎ বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
এলাকাবাসীর ব্যানারে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ-৮(ঈশ্বরগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহ্ নুরুল কবির শাহিন, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আমিরুল ইসলাম ভূঁইয়া মনি, যুগ্ম-আহ্বায়ক আতিকুর রাজ্জাক ভূঁইয়া হীরা, আব্দুল্লাহ আল-মামুন খোকন, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক সায়েদুল হক, সদস্য সচিব নূরে আলম জিকু, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি মুফতি হাবিবুল্লাহ প্রমুখ।
মানববন্ধনের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আমিরুল ইসলাম ভূঁইয়া মনি বলেন, ‘এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। অসংখ্য রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যায়। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক সংস্কারের জোর দাবি জানাচ্ছি।’
সাবেক সংসদ সদস্য শাহ্ নুরুল কবির শাহিন বলেন, ‘ঈশ্বরগঞ্জ চৌরাস্তা মোড় থেকে নয়শিমুল পর্যন্ত এই সড়কের বেহাল দশার কারণে অসংখ্য রোগী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। দলমত নির্বিশেষে জনস্বার্থে আজ সবাই মানববন্ধনে সমবেত হয়েছি। আগামী সাত দিনের মধ্যে সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করা না হলে, কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সওজের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ‘এরইমধ্যে ৮ ধারা নোটিশ তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর হয়ে গেলেই আগামী সপ্তাহের মধ্যেই জমির মালিকদের কাছে নোটিশ পৌঁছানো হবে। এরপর জমির মালিকগণ প্রয়োজনীয় কাগজপাতি জমা দিলেই দ্রুত সময়ের মধ্যেই টাকা উত্তোলন করতে পারবে। এরপর দ্রুত সড়কের কাজ শুরু হবে।’





