প্রথমে একটি বিক্ষোভ মিছিল বাজারের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার চৌরাস্তায় ফিরে আসে। পরে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে কাজী শহিদুল্লাহর নেতৃত্বে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল হোসেন, কৃষক সাইদুর রহমান ও দেলোয়ার হোসেন।
এসময় বক্তারা অভিযোগ করেন, হরগজ মোড় থেকে বাজার সড়কের বালুর চর এলাকায় অবস্থিত সেতুর উত্তর পাশে দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রাকৃতিক পানি নিষ্কাশনের পথ ছিলো। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর রাতের আঁধারে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ওই নিষ্কাশন পথ মাটি দিয়ে ভরাট করে দেন।
মানববন্ধনে কাজী শহিদুল্লাহ বলেন, ‘আনোয়ার, ফরিদ ও আলতাফ নামের কয়েকজন প্রভাবশালী এ ভরাট কাজে সহযোগিতা করেছেন। এতে করে সড়কের দুই পাশে বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে পানি আটকে যাচ্ছে। হাজার হাজার একর জমিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে ধান ও সবজি চাষ ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
তিনি আরও জানান, আগে এসব জমির পানি খাল হয়ে ধলেশ্বরী নদীতে যেতো। কিন্তু নিষ্কাশন পথ বন্ধ থাকায় এখন সামান্য বৃষ্টিতেই জমি ডুবে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, ‘আমার জমির পানি বের হতে না পারায় ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এরইমধ্যে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সামনে শীতকাল এখনই ব্যবস্থা না নিলে রবিশস্য চাষ করা সম্ভব হবে না।’
অন্যদিকে বেলাল হোসেন অভিযোগ করে জানান, ব্রিজের উত্তর পাশে হানিফ আলী ও ঝর্ণা বেগম জমি কিনেছেন। কিন্তু জমির চাইতেও বেশি জায়গাজুড়ে থাকা প্রাকৃতিক নিষ্কাশন পথ রাতের আঁধারে মাটি ভরাট করে ফেলেছেন তারা। এতে আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে ফসল নষ্ট হচ্ছে।
কৃষক দেলোয়ার হোসেন জানান, এ বিষয়ে তারা গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। যা স্থানীয়দের কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কৃষকরা দ্রুত নিষ্কাশন পথ খুলে দেওয়ার দাবি জানান। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে উপজেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাওসহ আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করার হুঁশিয়ারি তাদের।
অভিযুক্ত হানিফ আলী ও ঝর্ণা বেগম জানান, তারা নিজেদের কেনা জমিতেই মাটি ভরাট করেছেন।
এ কাজে সহায়তাকারী ফরিদ বলেন, জমির মালিক খুব গরিব। নিজেদের জমিতে মাটি ভরাট করেছেন। কিন্তু এক পক্ষ চাঁদা দাবি করেছিলো। চাঁদা না পেয়ে এবং আমাদের চরিত্রহননের জন্যই এ মানববন্ধনের আয়োজন করেছে।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে কোনো লিখিত অভিযোগ হাতে পাইনি। তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’





