ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে সহিংস বিক্ষোভ, আহত পুলিশ ও সাংবাদিক

উত্তাল ফরিদপুরের ভাঙ্গা
উত্তাল ফরিদপুরের ভাঙ্গা | ছবি: এখন টিভি
1

সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা। বিক্ষোভ থেকে ছড়িয়ে পড়েছে সহিংসতায়, থানা, উপজেলা পরিষদ, হাইওয়ে থানা, পৌরসভায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধরা। এসব ঘটনা ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে সাংবাদিকদের বাধা সৃষ্টি করেছেন বিক্ষুব্ধরা। এ ঘটনায় অনেক পুলিশ সদস্যসহ সাংবাদিকরা আহত হয়েছেন। ফরিদপুর -৪ সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে লোকাল সার্ভের আশ্বাস জেলা প্রশাসকে। স্থানীয় জনসাধারণকে ধৈর্য ধরা আহ্বান জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লা।

আজ (সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা থেকে ছড়িয়ে পড়ে এমন সহিংসতা। পরে কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধর ভাঙ্গা গোলচত্ত্বরে অবস্থান নিয়েছেন। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে গোলচত্ত্বরের ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা বাস স্ট্যান্ডে অবস্থান নেয় স্থানীয়রা। এসময় সেখানে রাইটকার নিয়ে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে পুলিশ সদস্যদের কোনো বাধা দিতে দেখা যায়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাস স্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোকারীদের সাথে দুপুর ১টার দিকে বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার জনতা লাঠি, রামদাসহ দেশিয় অস্ত্র নিয়ে মিছিল নিয়ে যোগ দেয়। মুহূর্তেই সেখানে থাকা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালান তারা। এসময় ১০ থেকে ১২ জন আর্মড পুলিশের সদস্য দৌড়ে গিয়ে পার্শ্ববর্তী ভাঙ্গা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মসজিদে আশ্রয় নেন। উত্তেজিত জনতার ইটপাটকেলে রক্তাক্ত অবস্থায় দৌড়াতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের। পরে কিছু সময় ঘিরে রাখেন উত্তেজিতরা। এক পর্যায়ে মাদ্রাসা ও মসজিদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে তাদের রক্ষা করেন।

এরপর সেখান থেকে বিক্ষুব্ধরা থানার দিকে চলে যান। এক পর্যায়ে থানায় থাকা গাড়ি ও থানা ভাঙচুর করেন। ভেতরে আটকা পড়েন পুলিশ সদস্যরা। পরে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়, আগুন দেয়া হয় সেখানে থাকা মোটরসাইকেলে। পরে হাইওয়ে অফিস ও পৌরসভা কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন মাইটিভির ভাঙ্গা উপজেলা প্রতিনিধি সরোয়ার হোসেন।

আরও পড়ুন:

এদিন সকাল থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা মাঠে অবস্থান নিলে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। পরে বেলা সাড়ে ১১টায় হঠাৎ করেই বিভিন্ন এলাকায় জড়ো হন এলাকাবাসী।

তবে জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্যা বলেন, ‘আমরা বিক্ষুব্ধদের শান্ত করার চেষ্টা করছি এবং নির্বাচন কমিশনে জানানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে আমাদের বলা হয়েছে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে। আমরা দ্রুত প্রতিবেদন দিলে আশা করি দুই একদিনের মধ্যে সমাধান হবে।’

আরও পড়ুন:

প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত গেজেটে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসে ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদি ইউনিয়নকে পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর-২ আসনে সংযুক্ত করা হয়। এরপরই তিন দফায় গত পাঁচ দিন ভাঙ্গা হয়ে যাওয়া দুটি মহাসড়ক, দুটি রেলপথ ও ঢাকা-মাওয়া ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করেন। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার মানুষ।

গত শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) তিন দিনের সকাল সন্ধ্যা অবরোধের ঘোষণা দেয়া হয়। পরে ঘোষণাকারী সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক ও আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ম.ম. সিদ্দিক মিয়াকে আটক করে ডিবি পুলিশ। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপরাধে গতকাল (রোববার, ১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন পুলিশ।

এসএস