অন্যদিকে, উত্তেজনা কমাতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে ব্রাজিল। এদিকে বৃহস্পতিবার প্রশান্ত মহাসাগরে দুটি নৌকায় চালানো হামলায় মাদক চোরাচালান চক্রের ৫ সদস্য নিহত হয়েছে দাবি যুক্তরাষ্ট্রের।
মাদক চোরাচালানের অভিযোগে ভেনেজুয়েলা বিরোধী অবস্থান আরও জোরালো করছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের নির্দেশে স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে পেন্টাগন। অঞ্চলটিতে এরইমধ্যে বহু সেনা ও যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও ভেনেজুয়েলা ছেড়ে যাওয়া ও প্রবেশকারী সব তেলবাহী ট্যাংকার অবরোধের নির্দেশও দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এতে করে ক্রমেই বাড়ছে ওয়াশিংটন-কারাকাস উত্তেজনা।
এ অবস্থায় কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই ভেনেজুয়েলায় আক্রমণ চালানো সম্ভব কি-না, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প জানান, এজন্য কংগ্রেসের অনুমতি প্রয়োজন নেই। তবে জানিয়ে রাখতেও কোনো সমস্যা নেই।
যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘এটি কোনো বড় বিষয় নয়। আমার তাদের বলার দরকার নেই। এটি প্রমাণিত হয়েছে। তবে জানাতেও আমি আপত্তি করব না। আমি কেবল আশা করি তারা কোনো তথ্য ফাঁস করবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হুমকি মোকাবিলায় কলম্বিয়াকে সামরিক ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো।
আর পড়ুন:
ভেনিজুয়েলা প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেন, ‘আমি কলম্বিয়াকে ভেনেজুয়েলার জনগণ-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে যোগদানের আহ্বান জানাচ্ছি। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, কলম্বিয়াও যদি কখনও আক্রমণের শিকার করা হয়, তাহলে ভেনেজুয়েলাও তাদের রক্ষায় পাশে থাকবে।’
যদিও, মাদুরোর ঐক্যের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো। জানিয়েছেনে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে কলম্বিয়া।
কলম্বিয়া প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো বলেন, ‘আমি ভেনেজুয়েলার সেনাবাহিনীকে আদেশ দিতে পারি না, ভেনেজুয়েলাও কলম্বিয়ার সেনাবাহিনীকে আদেশ দিতে পারে না। যার কারণে সামরিক ঐক্য অসম্ভব। আমি ভেনেজুয়েলার সামরিক বাহিনী এবং জনগণের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সমাধানকে সমর্থন করি। কারণ আমি সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করি।’
এদিকে, ভেনেজুয়েলা পরিস্থিতি নিয়ে আগামী মঙ্গলবার জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র-ভেনেজুয়েলা উত্তেজনা কমাতে মধ্যস্থতার জন্য ব্রাজিল প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা।
ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা বলেন, ‘আমি ট্রাম্পকে বলেছি যদি আপনি মনে করেন ব্রাজিল অবদান রাখতে পারে, তাহলে আমরা ভেনেজুয়েলার সঙ্গে এবং আপনার সঙ্গে বসে কথা বলতে আগ্রহী। যাতে করে আমরা লাতিন আমেরিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকায় সশস্ত্র সংঘাত এড়াতে পারে। ব্রাজিল এটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে, কারণ ভেনেজুয়েলার সঙ্গে আমাদের অনেক দীর্ঘ সীমান্ত নির্দিষ্ট করে ভাগ করা নেই।’
ভেনেজুয়েলার সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই প্রশান্ত মহাসাগরে মাদক পাচারকারী নৌকার বিরুদ্ধে হামলার মাত্রা আরও বাড়াচ্ছে মার্কিন সেনারা। গত বৃহস্পতিবার পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে দুটি নৌকায় চালানো হামলায় মাদক চোরাচালান চক্রের পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছে দাবি যুক্তরাষ্ট্রের। এক সপ্তাহের মধ্যে এটি মার্কিন সেনাদের তৃতীয় হামলা। সমুদ্রপথে গত ২ সেপ্টেম্বর পেন্টাগনের শুরু করা কথিত এ মাদকবিরোধী অভিযানে এরইমধ্যে নিহতের সংখ্যা একশো ছাড়িয়েছে।





