যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা: অস্ট্রেলিয়ায় সম্প্রসারিত হচ্ছে গবাদি পশুর খামার

অস্ট্রেলিয়ার একটি গরুর খামার
অস্ট্রেলিয়ার একটি গরুর খামার | ছবি: সংগৃহীত
0

গরুর মাংসের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ছাড়ের ঘোষণায় অস্ট্রেলিয়ায় সম্প্রসারিত হচ্ছে গবাদি পশুর খামার। খরা ও গো খাদ্যের দাম বাড়ায় যুক্তরাষ্ট্রে গরুর মাংস উৎপাদন কমে যাচ্ছে। এতে আমদানি নির্ভর হয়ে পড়ছে দেশটি। গেল বছর গরুর মাংস রপ্তানি করে আড়াই বিলিয়ন ডলার আয় করেছে অস্ট্রেলিয়া। মার্কিন শুল্ক প্রত্যাহার এ শিল্পে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে মনে করেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ট্রাম্পের শুল্কের চাপে যুক্তরাষ্ট্রে বেশিরভাগ ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যায় বহুগুণ। যা নিয়ে ভোক্তাদের মধ্যে দেখা দেয় গভীর উদ্বেগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে গেল মাসে দুই শতাধিক খাদ্যপণ্যের ওপর শুল্ক প্রত্যাহারে বাধ্য হয় ট্রাম্প প্রশাসন। যার মধ্যে গরুর মাংসের পাশাপাশি কফি, কলা ও কমলার রসের মতো পণ্য রয়েছে।

গেল ২০ বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে গরুর মাংসের দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। চাহিদা বেশি থাকলেও নেই পর্যাপ্ত সরবরাহ। এমনকি কয়েক দশক ধরে দেশটিতে গবাদিপশুর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। মার্কিন কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বছরে গবাদি পশুর সংখ্যা ১৯৫০ সালের পর সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে। বছরের পর বছর খরা এবং গো খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গবাদিপশুর সংখ্যা কমেছে।

এই সুযোগ লুফে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটিতে দিন দিন বাড়ছে গবাদি পশুর খামার। নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি খামারে কয়েক জাতের প্রায় ছয় হাজার গবাদি পশু পালন হচ্ছে। যেখানে গড়ে ৯০ দিনে একেকটি গরুর ওজন ৪০০ থেকে ৬০০ কেজি পর্যন্ত হয়। যা বিশ্বব্যাপী গরুর মাংসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে অবদান রাখছে।

অস্ট্রেলিয়ার গরুর মাংস রপ্তানির বড় বাজার ছিল জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীন। এবার যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তাদের অংশগ্রহণ বাড়ছে ব্যাপক হারে। আগামী কয়েক বছরে গবাদি পশুর সংখ্যা দ্বিগুণ হবে বলে আশা খামার মালিকের।

বিশ্লেষকদের ধারণা ২০২৭ সালের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় গবাদি পশুর সংখ্যা ২০ ছাড়িয়ে যাবে। এ সময়ের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার প্রায় অর্ধেক গবাদি পশুর মাংস আসবে এসব খামার থেকে। এছাড়া, প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমেই দেশটির ৯০ শতাংশ গবাদি পশু মোটাতাজা করা হয়।

গরুর মাংস রপ্তানির ওপর মার্কিন প্রশাসনের শুল্ক প্রত্যাহারকে স্বাগত জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেন, এই শিল্পে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটানোর এটাই সবচেয়ে বড় সুযোগ।

১৯৯০ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়া প্রতি বছর প্রায় দেড় থেকে ৪ লাখ টন গরুর মাংস যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে আসছে। এসব মাংস ফাস্ট-ফুড চেইন রেস্তোরাঁয় খুব জনপ্রিয়।

এএইচ