গত রোববার (২৩ নভেম্বর) নিজেদের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে এভাবেই ভোটকেন্দ্রের সামনে জড়ো হন গিনি-বিসাউয়ের ভোটাররা। এবারের নির্বাচনে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট উমারো সিসোকো এমবালোর সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দিতা করেন আরেক প্রার্থী ফার্নান্দো দিয়াস।
আজ (বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর) দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু এর একদিন আগেই গিনি-বিসাউয়ের ক্ষমতাভার গ্রহণের দাবি দেশটির একদল সেনা কর্মকর্তার।
গতকাল (বুধবার, ২৬ নভেম্বর) টেলিভিশনে দেয়া বক্তব্যে তারা জানান, দেশটির প্রেসিডেন্ট ভবনের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন তারা। পাশাপাশি এমবালোকে গ্রেপ্তারের তথ্যও জানান হাই মিলিটারি কমান্ড ফর দ্যা রিস্টোরেশন অব অর্ডারের সদস্যরা।
কমান্ড ফর দ্যা রিস্টোরেশন অব অর্ডারের মুখপাত্র দিনিস এন’চামা বলেন, ‘গিনি-বিসাউয়ের জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে অস্থিতিশীল করতে কিছু জাতীয় রাজনীতিবিদ ও বিদেশি মাদক কারবারিদের যোগসাজশে একটি বড় ধরনের চক্রান্ত ছিল। তারা নির্বাচনি ফলাফলকেও প্রভাবিত করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিল। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেশের জননিরাপত্তা বিবেচনায় হাই মিলিটারি কমান্ড দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে।’
আরও পড়ুন:
পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনি প্রক্রিয়া স্থগিতেরও ঘোষণা দিয়েছেন সেনা কর্মকর্তারা। এছাড়া জল, স্থল ও আকাসসীমা বন্ধের সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে। জারি করা হয়েছে রাত্রিকালীন কারফিউ।
শুধু এমবালো নয়, গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ফার্নান্দো দিয়াস ও প্রধান বিরোধী দল পিএআইজিসির নেতা ডমিঙ্গোস পেরেইরাকেও। এছাড়া সেনা কর্মকর্তাদের ঘোষণার আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভবন ও স্বরাষ্ট্র দপ্তরে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।
আফ্রিকার দেশ গিনি-বিসাউয়ে সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনা এবারই প্রথম নয় । পর্তুগালের কাছে থেকে ১৯৭৪ সালে স্বাধীনতা লাভের পর দেশটিতে একাধিকবার সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়া এবারের নির্বাচনের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন ও পর্যবেক্ষকরা। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগই পায়নি প্রধান বিরোধী দল পিএআইজিসি। অন্যদিকে, ফলাফল গ্রহণের আগেই নিজেদের বিজয়ী ঘোষণা করেন এবারের নির্বাচনের দুই প্রতিদ্বন্দী।
বিশ্বব্যাংকের মতে, বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর একটি গিনি-বিসাউয়ে। দেশটির মোট জনসংখ্যা প্রায় ২২ লাখ। যার অর্ধেকই দারিদ্র। এছাড়া লাতিন আমেরিকা এবং ইউরোপের মধ্যে মাদক পাচারের একটি অন্যতম হটস্পট এটি।





