এক সঙ্গে জড়ো করে রাখা হয়েছে ২০টি মরদেহ। স্বজনের আহাজারিতে ভারী বাতাস। ৪৪ দিন পর আবারও শোকের নগরী গাজা।
এই দৃশ্য গাজার দেইর আল বালাহ শহরের। শনিবার ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত ২০ ফিলিস্তিনির জানাজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই শহরেরই এক রাস্তায়। ইসরাইল এই হত্যাকাণ্ডকে হামলার পাল্টাও জবাব হিসেবে আখ্যা দিলেও নিহতদের পরিবারের অভিযোগ, বিনা কারণে হত্যা করা হয়েছে এই ফিলিস্তিনিদের।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, যুদ্ধ বন্ধ হওয়ায় আমরা নিরাপদেই ছিলাম। এই বেল্টটা আমার ভাইয়ের। সে শহিদ হয়েছে। তারা বললো যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। অথচ কালকেই আমাদের ওপর হামলা হলো। নিরপরাধ মানুষগুলো শান্তিতে ছিল। কিন্তু তাদের ওপর হামলা হলো কেন?
যদিও আইডিএফের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দক্ষিণ গাজায় ত্রাণ প্রবেশের পথে অনুপ্রবেশ করে তাদের ওপর হামলা করে এক ফিলিস্তিনি বন্দুকধারী। এর জেরেই পরিকল্পিতভাবে গাজার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:
শনিবারের এই হামলার পর, কায়রোতে মিশরের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হাসান রাসাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল। রোববার এক বিবৃতিতে হামাসের পক্ষ থেকে আবারও জানানো হয়েছে, ট্রাম্পের গাজা শান্তি প্রস্তাবের প্রথম ধাপ কার্যকরে তারা বদ্ধপরিকর। কিন্তু ইসরাইল শুরু থেকে অস্ত্রবিরতির কোনো শর্তই মানছে না।
এমন পরিস্থিতিতে ইসরাইল যুদ্ধবিরতির চুক্তির কোন কোন শর্ত লঙ্ঘন করছে তা নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরুর দাবি জানিয়েছেন হামাসের গাজা অঞ্চল প্রধান ও নির্বাসিত নেতা খলিল আল হায়া। এর আগে, গাজার সিভিল ডিফেন্স অভিযোগ করে, এখনও পর্যন্ত গেল ৪৩ দিনে প্রায় ৫শ বার যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করেছে ইসরাইল।
গেল মাসে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছিল মিশর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র। ইসরাইলি হামলার জেরে গতকালই এই তিন দেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করে হামাস। এছাড়াও, রাফাহ'র ইসরাইল নিয়ন্ত্রিত এলাকার সুরঙ্গে আটকে পড়া যোদ্ধাদের বিষয়েও সমাধান চেয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনটি।
এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকর নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে আল জাজিরাকে জানিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষকরা। ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে গাজার শাসনব্যবস্থার দায়িত্ব দেবে ফিলিস্তিনি টেকনোক্র্যাট কমিটি। যাদের গতিবিধি ও কর্মপদ্ধতি পর্যবেক্ষণ করবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে থাকা বোর্ড অব পিস- নামের একটি পর্যালোচনা কমিটি। এই কমিটির নেতৃত্বে গাজায় নামানো হবে আন্তর্জাতিক বাহিনী বা স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স। এই বাহিনীর কাজ হবে সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষা, ফিলিস্তিনি পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেয়া। আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন করলে গাজা থেকে সরে যেতে হবে ইসরাইলি বাহিনীকে। আর অস্ত্র জমা দিয়ে দেবে হামাস।





