টাঙ্গাইলে সড়ক সংস্কার নিয়ে কাগজে-কলমে কোটি টাকার কাজ দেখানো হলেও, মাঠে নেই একটি টাকারও কাজ! সিন্ডিকেটের কারসাজির কিছু নথি এসেছে এখন টেলিভিশনের হাতে।
একই কারসাজির চিত্র বাউশি-গোপালপুর, এলাসিন-দেলদুয়ার সড়কসহ কয়েকটি সড়ক প্রকল্পে। এসব প্রকল্প সড়ক বিভাগের সঙ্গে সিন্ডিকেট ঠিকাদার ফিরোজ চৌধুরী, জনি চৌধুরী, আজিজ, সুমন, মনোজ ও জামাই শাহীন নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তিন কিলোমিটার রাস্তায় গত ১ বছরে কোনো লোক আসেনি কাজ করতে। রাস্তা ঝাড়ু দিতেও আসেনি কেউ।
কাগজে-কলমে কাজ শেষ হওয়া গোপালপুর-বাউশি সড়কে গেল অক্টোবরে অনুসন্ধানে যায় এখন টেলিভিশন। সড়কে কাজ না করেই ঠিকাদারকে অর্থ পরিশোধ ও সার্টিফিকেট প্রদানের তথ্য জেনে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। কাজ না করেই কীভাবে অর্থছাড় পেল ঠিকাদার?
কাজ না হলেও বিল তুলে নেবার বিষয়টি স্বীকার করে সড়ক মেরামতের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দায় চাপান ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দিকে।
আরও পড়ুন:
জামালপুর সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘কাজ শেষ হলে তো ঠিকাদার বিল পাবে। এটা তো খুবই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটা তো নির্ধারণ করবে নির্বাহী প্রকৌশলী দপ্তর। বাস্তবায়নের পরে আমার দায়িত্ব এটা না যে সকল প্রকল্প আমি শতভাগ ভিজিট করবো।’
ঠিকাদারদের ভাষ্য, এটা তো আমরা জিন্নাত বিশ্বাসের নামে করেছি। আমরা তো কথা একবারে শেষ করি। কথা বলার পর আমরা একধাপে বিল করি। ফার্স্ট অ্যান্ড ফাইনাল বিল করি।
জিন্নাত হোসেন বিশ্বাস ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুজন আহমেদ বলেন, ‘টাঙ্গাইলে যে কাজগুলো জিন্নাতের নামে হচ্ছে সেগুলো জিন্নাতের নামে লোকান লোকজন করেছে। তারা অথোরাইজেশন নিয়ে করেছে। প্রতিটা অথোরাইজেশন আমাদের কাছে আছে। আমরা তো ওখানে যাই না। আমাদের লাইসেন্সের নাম ব্যবহার করেছে।’
জানতে চাইলে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. সিনথিয়া আজমিরী বলেন, ‘সার্টিফিকেটটা আমার দেয়া। কাজের সব ডিটেইলস আমার কাছে আছে। যদি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমার কাছে এ ব্যাপারে জানতে চান, আমি তাদের কাছে ওই জবাবদিহি করবো।’
সার্বিক বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘যারা সার্টিফিকেটটা ইস্যু করেছেন, তারা এর মাধ্যমে সুযোগ-সুবিধা লাভ করেছেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে। অবৈধভাবে লেনদেন হয় এখানে। হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। একধরনের যোগসাজশের দুর্নীতি।’




