যৌন হয়রানি রোধে এনএসসির নির্দেশনা উপেক্ষা; তদন্ত কমিটি দেয়নি বেশিরভাগ ফেডারেশন

বিভিন্ন ফেডারেশনের লোগো
বিভিন্ন ফেডারেশনের লোগো | ছবি: এখন টিভি
0

নারীদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধের অভিযোগে এনএসসির নির্দেশনায় বেশিরভাগ ফেডারেশনই করেনি তদন্ত কমিটি গঠন। ক্রীড়া পরিষদ এক সপ্তাহ সময় বেধে দিলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটির নাম জমা দিয়েছে মাত্র সাত ফেডারেশন। নির্দেশনা অমান্য করায় ফেডারেশনগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক। এদিকে এনএসসির পাঠানো চিঠি পায়নি বলে দাবি শ্যুটিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের।

দীর্ঘদিন ধরে অন্যায়, অবিচার, বঞ্চনা আর যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন দেশের নারী অ্যাথলেটরা। সম্প্রতি সাবেক ক্রিকেটার জাহানারা আলম মুখ খোলার পর একে একে নিজেদের প্রতি হওয়া নিগ্রহের কথা তুলে ধরেন অন্য ফেডারেশনের নারী খেলোয়াড়রাও। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী দেশের সব ফেডারেশন এবং অ্যাসোসিয়েশনকে ১৯ নভেম্বরের মধ্যে নুন্যতম তিনজন নারী সদস্যসহ ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি অভিযোগ কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।

তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবক সংস্থাকে অনেকটা বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে অভিযোগ কমিটির নাম জমা দেয়নি বেশিরভাগ ফেডারেশনই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের ৫১ ফেডারেশন এবং অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে সুইমিং, হকি, ভলিবল, ক্যারাম, আর্চারি, অ্যাথলেটিক্স, ব্যাডমিন্টনসহ মাত্র সাতটি ফেডারেশন কমিটি গঠন করে এনএসসিকে নাম পাঠিয়েছে। বাকি থাকা ৪৪ ফেডারেশন সময়মতো কেন জমা দেয়নি জানতে ফোন করলে ওপার থেকে এসেছে নানা অজুহাত। আর যৌন হয়রানিসহ এডহক কমিটি নিয়ে সবচেয়ে বিতর্কিত শ্যুটিং ফেডারেশন তো জানেই না এনএসসির এই চিঠির খবর।

বাংলাদেশ শ্যুটিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আলেয়া ফেরদৌসী বলেন, ‘এমন কোনো নোটিশ আমরা পাইনি। আমরা চাই বাহিরে থেকে কমিটি আসুক।’

আরও পড়ুন:

বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ক্যাপ্টেন মাকসুদ আহমেদ বলেন, ‘আমরা কিছুদিন আগে ইসলামিক সলিডারিটি গেমস থেকে এসেছি। আমাদের যে ব্যস্ততা কেমন আপনারা বুঝে উঠতে পারবেন না।’

বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘কমিটি গঠন করব। সেটি অ্যাপ্রুভাল হতে হবে। আমাদের প্রেসিডেন্ট ছিলো না।’

বাংলাদেশের কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নেওয়াজ সোহাগ বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি।’

তবে ক্যামেরার সামনে অকপটে নিজেদের দোষ স্বীকার করেছেন হ্যান্ডবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। সময় নিয়ে কমিটি গঠন করতে চান বলে জানান এ কর্তা।

বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এ একটি কমিটি হুটহাট করা যায় না। অনেক বিষয় রয়েছে। অনেক পরীক্ষার দরকার আছে, ভরসার লোক দরকার আছে। আমাদের কিছু ল্যাকিংস আসে। আমরা সময় বাড়ানোর জন্য চিঠি পাঠাবো।’

এদিকে ক্রীড়া পরিষদের নির্দেশনা অমান্য করা ফেডারেশনগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে এখন টেলিভিশনকে জানিয়েছেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক নজরুল ইসলাম। ফেডারেশনগুলোর কমিটির পাশাপাশি গঠন হবে এনএসসিরও নিরপেক্ষ অভিযোগ কমিটি।

জাতীয় ক্রিয়া পরিষদ নির্বাহী পরিচালক কবি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘যার কারণে দেরি হচ্ছে আমরা সেই কমিটির লোক পরিবর্তন করে দিতে পারি। আমাদের ঊধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করব। উপদেষ্টা মহোদয় এ বিষয়ে আমাদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন।’

তবে ফেডারেশন কর্তারা অভিযোগ কমিটিতে থাকায় এর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খেলোয়াড়রা।

বাংলাদেশ শ্যুটিং ফেডরেশনের শ্যুটার তাসমায়াতি এমা বলেন, ‘তদের কমিটি থেকেই তারা যদি পাঁচ সদস্যর কমিটি করে তাহলে পয়েন্ট কী? সেখানে অভিযোগ দিলে লাভ কী? সমস্যা তো মেইন বডিতে।

এফএস