গত বছরের নভেম্বরে দায়িত্ব নেয়ার কয়েকমাস পর থেকেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তখন পর্যন্ত গণভোটের কোনো আলোচনাই আসেনি রাজনীতির মাঠে। চলতি বছরের ২৮ আগস্ট যখন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বচনের কর্মপরিকল্পনা তথা- রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয় ইসির পক্ষ থেকে, তখনো সুরাহা হয়নি গণভোট ইস্যুটি।
সব সামলে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতিও নিচ্ছিল নির্বাচন কমিশন- ঠিক তখনই সরকারের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত আসলো একইদিনে গণভোট এবং সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। ফলে বাড়তি আরেক মহাকর্মযজ্ঞ যুক্ত হলো ইসির পরিকল্পনার খাতায়
সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে কমিশনের কাছে গণভোটের পরিকল্পনা জানতে চাইলে সিইসির উত্তর ছিল- আইন ছাড়া কিভাবে পরিকল্পনা করবে নির্বাচন কমিশন? সবশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে জানানো হয় পরবর্তী ৩ থেকে ৪ কার্যদিবসের মধ্যেই গণভোট আইন প্রণয়ন করবে সরকার।
আইন বিচার ও সংসদ মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘গণভোট আইন আমরা খুব দ্রুত করতে যাচ্ছি। এ সপ্তাহের মধ্যেই করা হবে। আগামী তিন থেকে চার কার্যদিবসের মধ্যে হয়ে।’
আরও পড়ুন:
আলোচনার ছিল ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করা হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের সাথে গণভোটের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে বাড়তি চাপে পড়বে ইসি। যার প্রভাবে পেছাতে পারে সংসদ নির্বাচনের তফসিল।
রিপোর্টস ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির সাবেক সভাপতি একরামুল হক সায়েম বলেন, ‘একইদিনে গণভোট আয়োজনে বাড়তি যে প্রস্তুতিগুলো সেই প্রস্তুতি নিতে যদি সময় লাগে অবশ্যই তা তফসিলে প্রভাব পড়ার মতো বিষয়। দুই চারদিন বেশি সময় লাগতে পারে।’
কমিশনও বলছে, জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজন, তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তবে এই আয়োজনকে বাড়তি দায়িত্ব ধরে নিয়ে গণভোটের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানান ইসি সচিব।
নির্বাচন কমিশন সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘একইদিনে গণভোট ও নির্বাচন হবে, এটিও একটি চ্যালেঞ্জ। নির্বাচনের গ্যাজেট প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত সবই আমাদের চ্যালেঞ্জ।’
বিশ্লেষকরা মনে করেন, সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি গণভোটে ভোটারদের আগ্রহী করে তুলতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ।
নির্বাচন বিশ্লেষক মুনিরা খান বলেন, ‘একইদিনে ভোট দিলে তার উৎসাহ বাড়বে। তারা নিজেদের গুরুত্ব বুঝবে।’
নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি বলেন, ‘১২ কোটি মানুষের জন্য ভোটের আয়োজন করা এটি বিশাল একটি কাজ। যারা কাজের মধ্যে আছে তারা গণভোটের ইলেকশন করেনি এর আগে। কারণ ৩৫ বছর আগে যে নিয়োগ পেয়েছেন সে ও রিটায়ার্ড করার কথা।’
জাতির কাছে প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে আস্থার জায়গা ঠিক রেখে আইন অনুযায়ী সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব।





