গেল সোমবার পাকিস্তানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে দেশটির আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার সংবিধানের বিতর্কিত ২৭ তম সংশোধনী বিল পাসের প্রস্তাব জানালে, এভাবেই এর কপি ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকে বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পিটিআইয়ের আইন প্রণেতারা। এরপরও দেশটির পার্লামেন্টের উভয়কক্ষে পাস হয়েছে বিলটি। গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) এতে স্বাক্ষর করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি।
মূলত এর মাধ্যমে ক্ষমতা বাড়ছে দেশটির বর্তমান সেনাপ্রধান আসীম মুনিরের। বিলের আওতায় দেশটির প্রতিরক্ষা বিভাগের দায়িত্ব পাচ্ছেন তিনি। অর্থাৎ সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌ ও বিমান বাহিনীরও সার্বিক কমান্ডের দায়িত্ব পাবেন মুনির। শুধু তাই নয়, মেয়াদ শেষেও পদমর্যাদা বহাল থাকবে তার। পাশাপাশি থাকছে আজীবন যেকোনো ফৌজদারি অপরাধ থেকে দায়মুক্তির বিশেষ সুবিধা।
বিলটি পাকিস্তানের সামরিক শাখার সামগ্রিক শক্তিমত্তা বাড়াচ্ছে নাকি দেশটিকে আরেকটি সেনা শাসনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে। এর মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর সেনাবাহিনীর কাছে সাংবিধানিক আত্মসমর্পণ হয়েছে মন্তব্য সমালোচকদের। এদিকে, সংবিধান বিশেষজ্ঞ রীমা ওমর বলেন, এই সংশোধনী কেবল সম্মানসূচক তাৎপর্য নয়, এটি প্রকৃত ক্ষমতাকেও নির্দেশ করে।
আরও পড়ুন:
স্বাধীনতা লাভের পর থেকে বেশ কয়েকটি সেনা অভ্যুত্থানের সাক্ষী দেশটি। এ কারণে মুনিরের পূর্বসূরি জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া ২০২২ সালে তার বিদায়ী ভাষণে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, দেশটির রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না সেনাবাহিনী।
কিন্তু নতুন সংশোধনীটি তার প্রতিশ্রুতিকে কতটুকু টিকিয়ে রাখবে তা নিয়েও তৈরি হয়েছে সংশয়। ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষের পর সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ গেল মে মাসে সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সেনা শাসক আইয়ুব খানের পর দ্বিতীয় সামরিক প্রধান হিসেবে ফাইভ স্টার র্যাংক পান আসীম মুনির। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী একজন ফাইভ স্টার র্যাংকধারীকে অপসারণে সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হয়।
আসীম মুনির সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই তাকে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে পাকিস্তান সরকার। গত বছর সংসদে সার্ভিস প্রধানদের মেয়াদ তিন থেকে পাঁচ বছর বাড়ানো হয়। যার অর্থ আগামী ২০২৭ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন মুনির। তবে নতুন আইনের আওতায় ২০৩০ সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিরক্ষা বাহিনী ও সেনাপ্রধানের দায়িত্ব সামলাবেন মুনির।





