না খেয়ে টানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গায় বসে দিতে হবে পরীক্ষা। তাও আবার দুই/তিন কিংবা পাঁচ/ছয় ঘণ্টা না। ৮ থেকে ১৩ ঘণ্টা! আর এই পরীক্ষার একটি নির্দিষ্ট সময়ে শব্দদূষণ বন্ধে অনেকটা অচল করে দেয়া হয় পুরো দেশ।
শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ধরে রাখতে সারাদেশে একযোগে থামিয়ে দেয়া হয় শেয়ারবাজার কার্যক্রম থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য, যানবাহন চলাচল এমনকি বিমান চলাচলও।
শুনতে অবাক লাগলেও; দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য এই ঘটনা একেবারেই স্বাভাবিক। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দেশটিতে এমনই এক পরীক্ষায় অংশ নেন সাড়ে ৫ লাখের বেশি শিক্ষার্থী। যা দেশটির ভাষায় সুনুং বা কলেজ স্কলাস্টিক অ্যাবিলিটি টেস্ট হিসেবে পরিচিত।
এর মাধ্যমে কলেজের শিক্ষার্থীদের কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ারই সুযোগ তৈরি হয় না বরং তাদের চাকরির সম্ভাবনাসহ ভবিষ্যৎ জীবনে চলার পথ তৈরি হয়। তাই গুরুত্বপূর্ণ এ পরীক্ষায় অংশ নেয়া সন্তানদের নিয়ে বেশ আশাবাদী অভিভাবকরা।
অভিভাবকদের একজন বলেন, ‘এই পরীক্ষাটি আমার মেয়ের জীবনের প্রায় ২০ বছরের একটি অর্জন। মাধ্যমে তার জীবনে আরেকটি বড় সূচনা হবে। সে অনেক পড়াশোনা করেছে। এ পর্যন্ত আসার জন্য অনেক কষ্ট করেছে। আমি আশা করি সে দুর্দান্ত ফলাফল পাবে।’
আরও পড়ুন:
গুরুত্বপূর্ণ এই পরীক্ষার কারণে এক ঘণ্টা দেরিতে স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে শেয়ার বাজারে লেনদেন শুরু হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। এমনকি ইংরেজি লিসেনিং টেস্ট ঘিরে দুপুর ১টা ৫ মিনিট থেকে ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত কোলাহলমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতে একযোগে গোটা দেশেই বিমান ও যানবাহন চলাচলসহ সব ধরনের দোকানপাট, বাজার, বন্দরের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ ছিলো।
অভিভাবকদের আরেকজন বলেন, ‘বিদেশিদের কাছে এটা হয়তো অতিরিক্ত মনে হতে পারে। কিন্তু এটা কেবল আমাদের দেশেই সম্ভব। সরকার আমাদের সন্তানের মঙ্গলে যা যা করতে পারে তার সবটা নিশ্চিত করে। দক্ষিণ কোরিয়া বহু আগে থেকে এটি হয় আসছে।’
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে শুরু হয় এ পরীক্ষা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য ৮ ঘণ্টা এবং দেখতে পান না এমন শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষার সময় নির্ধারিত ছিলো ১৩ ঘণ্টা।
গণিত, ইংরেজি, বিজ্ঞান, বিদেশি ভাষাসহ আরও বেশ কয়েকটি বিষয়ে প্রায় ২০০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। গত ৭ বছরের মধ্যে এবারই সর্বোচ্চ সাড়ে ৫ লাখের বেশি শিক্ষার্থী সুনুং পরীক্ষা দিয়েছেন।





