মুন্সীগঞ্জে অস্ত্রের মুখে ডাকাতির অভিযোগ, অর্ধকোটি টাকার মালামাল লুট

লুটপাটের কারণে তছনছ হয়ে যাওয়া ঘর
লুটপাটের কারণে তছনছ হয়ে যাওয়া ঘর | ছবি: এখন টিভি
1

মুন্সীগঞ্জ গজারিয়ায় অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে ডাকাতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় ডাকাত দল স্বর্ণালংকারসহ ৫৪ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে বলেও জানানো হয়। রোববার (২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি দক্ষিণপাড়া এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হকের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হকের মেয়ে সাথী বেগম বলেন, ‘রাত একটার দিকে একটি শব্দ পেয়ে আমার ঘুম ভেঙে যায়। তবে সে সময় বিষয়টি আমরা সেভাবে আমলে নেইনি। রাত তিনটার দিকে উঠে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে বসলে জানালার গ্রিল কেটে বাসার ভেতরে প্রবেশ করে দুই যুবক। তারা প্রথমে আমাকে, পরে আমার ছেলে সাবিদকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। পরবর্তীতে আমাদের বিল্ডিংয়ের চারটি ফ্ল্যাটের প্রত্যেকটিতে একের পর এক লুটপাট চালাতে থাকে তারা। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলে এ ডাকাতির ঘটনা। তারা প্রায় নগদ ৩ লাখ টাকা, ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৯টি মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা আমাদের সবাইকে একটি রুমে আটকে রেখে বাহির থেকে তালা লাগিয়ে তারপর চলে যায়।’

ঘটনার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী সাবিদ বলেন, ‘প্রথমে ডাকাত দলের দুই সদস্য কাটার দিয়ে জানালার গ্রিল কেটে রুমের ভেতরে প্রবেশ করে। পরে ডাকাত দলের আরও ২২/২৩ জন সদস্য বাসার ভেতরে প্রবেশ করে। বাইরে আরও কয়েকজন পাহারায় ছিল। ডাকাত দলের অধিকাংশ সদস্যের মুখে মাস্ক ও গামছা ছিল। তারা অস্ত্রের মুখে আমাকে জিম্মি করে আমাকে দিয়েই অন্যান্য ফ্ল্যাটের দরজা খোলান। আমার চোখের সামনে একের পর এক রুমে ডাকাতি হয়।’

অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হক বলেন, ‘আমার তিন ছেলে দেশের বাইরে। তাদের পাঠানো প্রায় ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার, কয়েকদিন আগে ব্যাংক থেকে তোলা নগদ ৩ লাখ টাকা ও ৯টি মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে যায় তারা। ডাকাতরা আমাদের পরিবার সম্পর্কে অনেক কিছু জানত। কোন রুমে কী আছে, আমরা কবে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছি সবই জানত। আমার ধারণা স্থানীয় লোকও এর সঙ্গে জড়িত। এ বিষয়ে আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করব।’

ভুক্তভোগীর প্রতিবেশী লাক মিয়া বলেন, ‘আমরা পাঁচটার দিকে বিষয়টি প্রথমে বুঝতে পারি। পরবর্তীতে বাইরে থেকে লক করা রুম থেকে আমরা তাদের উদ্ধার করি। তারপর বিষয়টি জানাজানি হয়। এরমধ্যে ডাকাতি শেষে নির্বিঘ্নে চলে যায় ডাকাত দলের সদস্যরা।’

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘সকাল ৬টার দিকে আমি ৯৯৯ থেকে একটি কল পেয়ে এ বিষয়ে জানতে পারি । খবর পাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’

এএইচ