নভেম্বরের প্রথম দিন, সরকারি ঘোষণায় উন্মুক্ত সেন্টমার্টিন। তবু কক্সবাজার ঘাটে নেই জাহাজের হুইসেল, নেই ভ্রমণের কোলাহল। নীল সমুদ্রের ডাক আছে, কিন্তু সাড়া দিচ্ছে না কেউ—কারণ দ্বীপে নেই রাতের অনুমতি, নেই সাগরবেলার রাত্রি-স্বপ্ন দেখার সুযোগ।
অনেকেই এসেছিলেন সেন্টমার্টিন যাওয়ার আশায়, কিন্তু ফিরে যেতে হচ্ছে খালি হাতে।
পর্যটকদের একজন বলেন, ‘ফরিদপুর থেকে রওনা হয়ে ঢাকা থেকে এসেছি। আমি জানি আমি সেন্টমার্টিন যেতে পারব, সব খুলে দিয়েছে। তবে এখানে এসে দেখছি জাহাজ নেই, টিকিটও নেই।’
জাহাজ মালিকরা বলছেন, দিনভিত্তিক যাত্রায় খরচ ও সময়—দুটোই বেশি। রাতযাপনের অনুমতি না থাকায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না কেউ।
আরও পড়ুন:
সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, ‘রাতযাপনের সুযোগ দিলে তবেই সম্ভব। এটিই বাস্তবসম্মত। আমরা চালাতে চাইলিই তো পারব না। টুরিস্টরা তো যাবে না।’
একসময় টেকনাফ থেকেই যেত জাহাজ—কিন্তু সীমান্তের অস্থিরতায় থেমে যায় সেই যাত্রা। এরপর থেকে কক্সবাজার শহরই হয়ে ওঠে সেন্টমার্টিনের নতুন গেটওয়ে।
টেকনাফ থেকে ট্রলার বা স্পিডবোটে স্থানীয়রা ঝুঁকি নিয়ে দ্বীপে গেলেও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ অনুমতি নেই। জেলা প্রশাসন বলছে, কক্সবাজার থেকে জাহাজ চলাচলে কোনো বাধা নেই—শুধু যাত্রী লাগবে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আ মান্নান বলেন, ‘ডিসেম্বর বা জানুয়ারীতেই সরকার রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করবে। সেখানে পর্যটকদের অবস্থান নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যই আমরা জেলা প্রশাসন থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সকল ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’
দ্বীপের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকার দিয়েছে ১২টি কঠোর নির্দেশনা। দিনে গিয়ে দিনে ফেরার সীমাবদ্ধতা কাটলে আবার জেগে উঠবে দ্বীপের পথে মানুষের পদচারণা—ফিরে আসবে সেন্টমার্টিনের হারানো উৎসব।





