যশোর সদরের তেঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা একরামুল হোসেন। ৩৪ বছর ধরে করেছেন তাঁতের গামছা বুননের কাজ। এতে জীবনযাপনে হিমশিম খাওয়ায় ২০১৮ সালে পেশা বদল করে কাঠের নানা পণ্য তৈরি শুরু করেন। ধীরে ধীরে কাঠের খুন্তি, চামচ, লেবুর রস বের করার চাপ-যন্ত্র, ডালঘুঁটনি তৈরি করে নিজের ভাগ্য বদলে ফেলেছেন তিনি। গড়ে তুলেছেন কারখানা। একরামুলের মতো তেঘরিয়া গ্রামের অন্তত ২৬ উদ্যোক্তা গড়ে তুলেছেন এমন কারখানা।
উদ্যোক্তা একরামুল হোসেন বলেন, ‘আমি ভাবছিলাম পরিবর্তন করা যায় কীভাবে? তারপর এ ব্যবসা শুরু করলাম। এখন আমার নিজের বাড়ি হয়েছে। ৭ থেকে ৮ জন লোক আমার এখানে কাজ করে। সবাই ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা করে আয় করতে পারে প্রতিদিন।’
২০১২ সালে ওই গ্রামের সুবোধ রায়ের কারখানা থেকে শুরু হয় কাঠের তৈজসপত্র তৈরির কাজ। তার কারখানা থেকে এরই মধ্যে ৫০ জন কাজ শিখে নিজেরাই কারখানা গড়ে তুলেছেন, নয়তো অন্যের কারখানায় কাজ করছেন। এতে মালিকদের পাশাপাশি ভাগ্য বদলেছে শ্রমিকদেরও।
উদ্যোক্তারা জানান, আগে কাজের কোনো নির্দিষ্ট কিছু ছিলো না। বর্তমানে এ পেশায় আসার পর রোজগারও ভালো হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
বৈদ্যুতিক লোডশেডিং ও প্রয়োজনীয় মূলধনের অভাবে পণ্যের ব্যাপক চাহিদা সত্ত্বেও উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলে জানালেন উদ্যোক্তারা। এ সমস্যার সমাধান হলেই বিদেশেও পণ্য রপ্তানি করতে পারবেন বলে মনে করছেন তারা।
উদ্যোক্তারা জানান, এ কাজ শুরু করার পর হঠাৎ করে চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। ফলে ২ জন নিয়ে শুরু করলেও পরবর্তীতে তা আরও বেশি লোক নিয়ে করতে হয়।
বিসিক জানায়, এই উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার সুযোগ রয়েছে। শিল্পোন্নয়নে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।
বিসিক উপ-মহাব্যবস্থাপক এম এনাম আহমেদ বলেন, ‘আমরা এরইমধ্যে ভিজিট করেছি। তারা কিছু সমস্যার কথা বলেছেন। যেমন- বিদ্যুৎের সমস্যা, আর্থিক অস্বচ্ছলতা এবং বাজারজাতকরণের বিষয়টা। সে বিষয়ে আমরা আশ্বাস দিয়েছি বিদ্যুৎ বিভাগকে আমরা একটা পত্র প্রদান করবো যাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ তারা পেতে পারেন। আর তাদের পণ্যের মার্কেটিংয়ের জন্য জেলা পর্যায়ে একটা মেলা হয় বিসিকের সেখানে আমরা তাদের পণ্যের প্রচার করে দিতে পারি।’
তেঘরিয়ার ২৬টি কারখানায় কাজ করছেন অন্তত ৫০০ নারী-পুরুষ। বছরে এখান থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকার পণ্য যায় সারা দেশে।





