ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের মর্গে মরদেহ ধর্ষণের ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন

গ্রেপ্তারকৃত আবু সাঈদ (১৯)
গ্রেপ্তারকৃত আবু সাঈদ (১৯) | ছবি: এখন টিভি
0

ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের মর্গে মরদেহ ধর্ষণের ঘটনা তদন্তে গাইনী বিভাগের অধ্যাপক ডা. তানজিনা লতিফকে প্রধান করে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। কমিটির অন্য সদস্য সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. রবিউল করিম এবং সদস্য সচিব ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শোহাব নাহিয়ান। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে মৃতদেহ ধর্ষণের ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে অভিযুক্ত মরদেহ বাহক হালুয়াঘাটের খন্দকপাড়া গ্রামের আবু সাঈদ।

আত্মহত্যার আগে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের এক তরুণী সুইসাইড নোটে লিখে যায়, তার মৃত্যুের জন্য দায়ী তার দুর্ভাগ্য। তার মরদেহ যেন কাটাছেঁড়া করা না হয়। কবরে যেন বেড়া দিয়ে রাখা হয়, যাতে কুকুর ঢুকতে না পারে।

কিন্তু পৃথিবী ছাড়ার পরও তার মরদেহের সঙ্গে ঘটে সবচেয়ে জঘন্য ও নিকৃষ্ট ঘটনা। তার মৃতদেহ শিকার হয় ধর্ষণের। ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে চিকিৎসকের সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দেন তিনি। বেরিয়ে আসে এক জঘন্য বর্বর ঘটনা।

ময়মনসিংহে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ্ আল মামুন জানান, গেলো ১৯ অক্টোবর রাতে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে আত্মহত্যা করেন ওই তরুণী। ২০ অক্টোবর হালুয়াঘাট থানা থেকে সাঈদ নামে এক যুবক ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নিয়ে যায় ময়মনসিংহ মেডিক্যালের মর্গে।

দুপুরে মর্গেই মরদেহের সাথে যৌনাচার করে সাঈদ। মর্গে মরদেহ বুঝিয়ে দিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর ঘুমানোর কথা বলে মর্গ কর্মীর বাসা থেকে চাবি নিয়ে আবারও একা মর্গে প্রবেশ করে মরদেহ বাহক সাঈদ। গ্রেপ্তারকৃত অভিযুক্ত আবু সাঈদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক প্রদান করেছে।

মর্গ কর্মী নাদিরা বেগম জানান, সোমবার সকাল ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের মর্গে ওই নারীর মরদেহ নিয়ে আসে ভ্যানচালক। সঙ্গে আসে মরদেহ বাহক আবু সাঈদ। মরদেহ বুঝে নিয়ে মর্গ তালাবদ্ধ করে চলে আসেন মর্গের কর্মী। পরে দুপুর ১২টার দিকে মর্গে ঘুমানোর কথা বলে মর্গ কর্মীর বাসা থেকে চাবি নিয়ে আবারও একা মর্গে প্রবেশ করেন মরদেহ বাহক আবু সাঈদ। সেখানে কী ঘটেছে সেটি তিনি জানেন না।

তবে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান জানান, ময়নাতদন্তে মরদেহে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেলেও কোথায়, কখন ঘটেছে সেটি নিশ্চিত নন তারা।

ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল আলম খান জানান, একজন পুলিশ কনস্টেবল ডোমের কাছে মরদেহ বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও তা করেননি। তবে ময়নাতদন্তের সময় তিনি ছিলেন। মর্গের কর্মীদের কোনো গাফিলতি আছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হবে।

সেজু