ফেনীতে বাড়ছে ডাকাতি ও ছিনতাই; প্রবাসী ও ব্যবসায়ীরা লক্ষ্যবস্তু

ফেনী পুলিশ সুপারের কার্যালয়
ফেনী পুলিশ সুপারের কার্যালয় | ছবি: এখন টিভি
0

ফেনীতে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে ডাকাতি, চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। প্রবাসী ও ব্যবসায়ীদের বাড়ি টার্গেট করছে দুষ্কৃতিকারীরা। লুট হচ্ছে স্বর্ণালংকারসহ কোটি টাকার সম্পদ। ভুক্তভোগীরা বলছেন, খোয়া যাওয়া মালামাল উদ্ধার হচ্ছে না, মামলা করেও মিলছে না প্রতিকার।

দাগনভূঞাঁ উপজেলার সিলোনিয়া এলাকার ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিন বাবুলের বাড়িতে সম্প্রতি রাতের আধারে হয় দুর্ধর্ষ ডাকাতি। বারান্দার গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাত দল নিয়ে যায় বাবুলের বেলজিয়াম ফেরত মেয়ের ইউরো, নগদ টাকা ও ৭০ ভরি স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পদ।

ভুক্তভোগী কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি দেখলাম মুখোশ পড়া চারজন। তাদের কাছে দেশিয় অস্ত্র ছিলো। আমাদের প্রায় ২ কোটি টাকার জিনিস নিয়ে গেছে।’

এর একদিন পর সোনাগাজী ও ফেনী শহরে ঘটে আরেও দুটি ডাকাতির ঘটনা। সোনাগাজির ছাড়াইত কান্দি এলাকার গ্রাম্য চিকিৎসক মোশারফ হোসেন খানের বাড়িতে হয় ডাকাতি। অস্ত্র ঠেকিয়ে ডাকাতদল নিয়ে যায় ১০ ভরি স্বর্ণালংকার। ফেনী শহরের লাতু মিয়া সড়কের স্বপ্ননীড় থেকেও চার ভরি স্বর্ণসহ সাড়ে তিন লাখের বেশি নগদ টাকা নিয়ে যায় ডাকাতদল।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, তাদের জিম্মি করে ডাকাতি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:

এক সপ্তাহের ব্যবধানে এসব ঘটনায় লুট হয়েছে আড়াই কোটি টাকারও বেশি সম্পদ। জেলার সোনাগাজী, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী, পরশুরাম ও দাগনভূঞাঁ মিলিয়ে এক বছরে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের এমন ঘটনা শতাধিক।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, একের পর এক চুরি, ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও প্রতিকার মিলছে না। কিছু ক্ষেত্রে মামলা করতে গেলে ডাকাতির বিষয়টি উহ্য রেখেই মামলা নেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিশিষ্টজনরা বলছেন, এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিঘ্নিত হবে জননিরাপত্তা।

স্থানীয়রা জানান, নামসহ বেশ কিছু মামলা হয়েছে, তাদের বিষয়ে তথ্য আছে। তবে তাদের গ্রেপ্তার হয়েছে বলে তারা জানেন না। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলে জানান স্থানীয়রা।

এদিকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, চুরি-ডাকাতির মত ঘটনা ঠেকাতে সজাগ দৃষ্টি রয়েছে তাদের। অভিযোগ এলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ফেনী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমাান বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি আমি দেখছি না। স্বাভাবিক বিষয় এটি, সবসময়ই এ সিজনে এমন হয়ে থাকে। আমরা মনে করি অন্যান্য সময়ের তুলনায় আমরা ভালো আছি। তবে চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে এটি নিয়ে আমরা কাজ করছি।’

শহর কিংবা গ্রাম চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি এখন ফেনীতে নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। ভুক্তভোগীরা বলছেন মিলছে না প্রতিকার, ধরা পড়ছেনা আসামিরা। আইন-শৃঙ্খলার এ বেহাল দশার উত্তরণ চান স্থানীয়রা।

এফএস