ভারতের অন্যতম রপ্তানিমুখী শিল্পের একটি চিংড়ি। তবে ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষিত ৫০ শতাংশ শুল্কের খেসারত দিতে হচ্ছে খাতটিকে। এরই মধ্যে দেশটির অন্ধপ্রদেশে বাতিল হয়েছে চিংড়ির ৫০ শতাংশ ক্রয়াদেশ। প্রদেশটির সরকারি দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, শুধু চিংড়ি রপ্তানিতেই প্রায় ২৫ হাজার কোটি রুপির লোকসান গুনতে হতে পারে। এতে হতাশ প্রদেশটির চিংড়ি চাষিরা।
অন্ধপ্রদেশের চিংড়ি চাষিদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্যান্য দেশে চিংড়ি রপ্তানি শুরু করেছি। আফ্রিকা এই খাতের বড় ক্রেতা। তবে তারা খুব অল্প পরিমাণে পণ্যটি কিনছে। আমরা লোকসানের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এ অবস্থায় সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, দেশিয় বাজারে পণ্যটির চাহিদা বাড়াতে উদ্যোগ হাতে নিতে। তাহলেই আমরা এ প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারবো।’
ভারতীয় চিংড়ি রপ্তানির ওপর বর্তমানে ৫৯ দশমিক ৭২ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করেছে মার্কিন প্রশাসন। এর মধ্যে কাউন্টারভেইলিং অর্থাৎ ভর্তুকি প্রতিরোধে ৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ ও অ্যান্টি ডাম্পিং খাতে যুক্ত হয়েছে ৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ শুল্ক।
এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে নিজের রাজ্যের চিংড়ি চাষীদের বাঁচাতে কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তা চেয়েছেন অন্ধপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু। এ লক্ষ্যে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারণ, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীয়ূস গয়াল ও মৎস্যমন্ত্রী রাজীব রঞ্জন সিংয়ের কাছে ভিন্ন ভিন্ন চিঠি লিখেছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
চিঠিতে অন্ধপ্রদেশের চিংড়ি চাষীদের দুর্দশার কথা উল্লেখ করে নাইডু কেন্দীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে পণ্য ও পরিসেবা কর জিএসটি ছাড় দেয়া ও রাজ্যের মৎস্য চাষিদের বাঁচাতে বিশেষ আর্থিক সুবিধা দেয়ার আহ্বান জানান।
পাশাপাশি তিনি দেশটির শিল্প ও মৎস্যমন্ত্রীর কাছে লেখা ভিন্ন চিঠিতে আহ্বান জানান, মাছ রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প দেশগুলোর সঙ্গে চুক্তি এগিয়ে নেয়ার।
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো ছাড়াও, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব ও রাশিয়ার মতো দেশগুলোর সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি করার আহ্বানও জানান নাইডু।
এছাড়া দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজার সম্প্রসারণে কেন্দ্রীয় সরকারকে নতুন উদ্যোগ হাতে নেয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
ভারতের মোট চিংড়ি রপ্তানির প্রায় ৮০ শতাংশের সরবরাহকারী অন্ধ্রপ্রদেশ। এছাড়া দেশটির মোট সামুদ্রিক পণ্যের ৩৪ শতাংশ রপ্তানি হয় অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে, যার বার্ষিক রপ্তানি মূল্য প্রায় ২১ হাজার ২৪৬ কোটি রুপি। অন্ধপ্রদেশের প্রায় আড়াই লাখ পরিবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ মাছ চাষের ওপর নির্ভরশীল।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে চিংড়ি ও সামুদ্রিক পণ্য রপ্তানি করে ভারত ৬৩ হাজার ৯৬৯ কোটি রুপি আয় করেছিল। তবে ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খাতের তালিকায় এখন সম্ভাবনায় চিংড়ি খাত।




