কেউ এসেছিলেন খাবার কিনতে, কেউবা এসেছিলেন জীবিকার তাগিদে। হঠাৎই রেস্টুরেন্ট আর মার্কেটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। মুহূর্তেই ঝড়ে গেল ২০ জনের বেশি মানুষের প্রাণ। হুড়োহুড়ি করে ভ্যানে করে নিহতদের মরদেহ আর আহতদের নিয়ে যাওয়া হলো স্থানীয় হাসপাতালে। এই ঘটনা গাজা শহরের হলেও পুরো উপত্যকার চিত্র অনেকটা একই।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘সবাই কাজ করছিলো, বাচ্চাদের খাবারের জন্য। তারা নিরস্ত্র মানুষকে মেরে ফেলেছে। মানুষ ক্ষুধার কারণেও মারা যাচ্ছে। আমাদের খাবার প্রয়োজন, তারা আমাদের মেরে ফেলছে।’
আরেকজন বলেন, ‘বাজার করছিলাম। হঠাৎ দেখি যুদ্ধবিমান, এখানে মানুষ পশু কেউ নিরাপদ না। যুদ্ধ বন্ধ করুন। আমরা বেঁচে থাকতে চাই।’
এর আগে আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত করা স্কুলেও ভয়াবহ হামলা চালায় ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। ধ্বংসস্তূপ থেকে স্বজনদের মৃতদেহ খুঁজতে দেখা যায় ফিলিস্তিনিদের।
বাসিন্দাদের আরেকজন বলেন, ‘মনে হলো ভূমিকম্প হচ্ছে। বাচ্চাদের রাখা আশ্রয়কেন্দ্রে হামলা হলো। শিশুদের জন্যেও কোনো ছাড় নেই ইহুদিদের। অথচ এখানে ৩০০ পরিবার ছিল। খাবারের সব মজুতও ধ্বংস করে ফেলেছে।’
গাজা শহর, দক্ষিণের রাফা কিংবা উত্তরাঞ্চল, ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর নতুন উদ্যমে শুরু হওয়া আগ্রাসন থেকে মুক্তি পাচ্ছে না কোন স্থানই। শত শত ফিলিস্তিনি হত্যা করেও যুদ্ধবিরতি কার্যকরের কোনো উদ্যোগ নেই ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর। উল্টো জানালেন, ইসরাইলি ২১ জন বন্দি এখনও জীবিত আছেন। কিন্তু সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘২১ জন বন্দি এখনও জীবিত আছেন। আরো তিন জনের অবস্থা সম্ভবত ভালো না। এমনও হতে পারে যে তারা জীবিত না। তাই বন্দিদের সংখ্যা এখন ২১। তবে আমরা হার মানবো না। সবাইকে দেশে ফিরিয়ে আনবো। এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ আছে আমাদের সামনে। ইরান বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আমরা শক্তিশালী। নিজেদের প্রতিরোধ করতে পারবো।’
যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আগামী দিনের মধ্যে বন্দিবিনিময় ও যুদ্ধবিরতি নিয়ে নতুন প্রস্তাব আসতে পারে। আসতে পারে বড় ঘোষণাও। পাশাপাশি গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে ইসরাইলের প্রস্তাবে রাজি হতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
এমন অবস্থায় মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরাইল যদি বন্দি বিনিময় নিয়ে চুক্তি এভাবে ঝুলিয়ে রাখে, তেল আবিবকে ছাড়াই শুধু সৌদি আরবকে সঙ্গে নিয়ে আঞ্চলিক চুক্তিতে আসবে যুক্তরাষ্ট্র।
গাজায় চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রে রাস্তায় নেমেছেন কলোম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীরা। গাজার জন্য বিক্ষোভ, স্বাধীন এলাকা ব্যানারে স্লোগান দেন তারা। এসময় শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, গাজা বিক্রির জন্য নয়। এসময় গ্রেপ্তার করা হয় অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে।





